Thursday 25 June 2020

// // Leave a Comment

*তপশিলি উন্নয়নে- যোগেন্দ্রনাথ বনাম শ্যামাপ্রসাদ* লেখক – প্রদীপকুমার বিশ্বাস




তপশিলি উন্নয়নে- যোগেন্দ্রনাথ বনাম শ্যামাপ্রসাদ

     লেখক – প্রদীপকুমার বিশ্বাস
     ১৯৪১ সালে নভেম্বর মাসে ফজলুল হক সাহেবের প্রথম মন্ত্রীসভা ভেঙে যায়। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই হিন্দু মহাসভার শ্যামাপ্রসাদের সাহায্যে দ্বিতীয়বার হকসাহেব মন্ত্রীসভা গঠন করেন। অখণ্ড বাংলায় যা “শ্যামা-হক” মন্ত্রীসভা নামে পরিচিত। অর্থাৎ মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডলের আগেই শ্যামাপ্রসাদ মুসলিম মন্ত্রীসভা গঠনের শরিক ও তার মন্ত্রী হয়েছিলেন।
     ১৯৪১ সাল থেকে ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত ‘শ্যামা-হক’ মন্ত্রীসভার অন্যতম ক্ষমতার অধিকারি শ্যামাপ্রসাদ তপশিলি সমাজের উন্নতির জন্য কিছুই করেননি। তিনি শুধুমাত্র বর্ণহিন্দু তথা উচ্চবর্ণীয় হিন্দুদের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা দিতে ব্যস্ত। তপশিলি সমাজের মানুষ যাতে শিক্ষা ও চাকুরীতে কোনো সুযোগ না পায়, তার জন্য শ্যামাপ্রসাদ হকসাহেবকে দিয়ে সেই ষড়যন্ত্রই করে গেছেন। শুধু তাই নয়, হকসাহেবের সময়কালে মুসলমানেরাও তপশিলি সমাজের ন্যায় শিক্ষা ও সরকারী চাকুরী থেকে সমানভাবে বঞ্চিত হয়। শ্যামাপ্রসাদের ষড়যন্ত্রে সরকারী সমস্ত সুযোগ সুবিধা বর্ণহিন্দুরা পেতে থাকে।
শ্যামা-হক মন্ত্রীসভার নেতৃত্বে সংগঠিত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হলো-
(১) শ্যামা-হক মন্ত্রীসভায় District School Board গঠনের জন্য একটি আইন প্রণীত হয়। Board এর সদস্য নির্বাচনের পদ্ধতি অনুসারে তপশিলি জাতির কোনো সদস্য নির্বাচিত হতে পারবেন না।*১
(২) এই মন্ত্রীসভার সময়কালে ২৫০০ টাকার চাকুরীতে মুসলমান ও তপশিলি সমাজের কেউ কে ইনিয়োগ করা হয়নি। এক্ষেত্রে সবটাই নিয়োগ হয়েছিল বর্ণহিন্দুরা।*২
(৩) Communal Ratio Rule প্রবর্তিত থাকা সত্ত্বেও তপশিলি জাতির প্রার্থীগণকে তদানুসারে চাকুরী দেওয়া থেকে বঞ্চিত করা হয়।*৩
(৪) তপশিলি জাতির শিক্ষার জন্য বার্ষিক পাঁচ লক্ষ টাকার রেকারিং গ্রান্ট শ্যামাপ্রসাদের পরামর্শে ‘শ্যামা-হক’ মন্ত্রীসভা বন্ধ করে দেন। *৪
(৫) বিদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সরকারী বৃত্তির সুযোগ অধিক মাত্রায় বর্ণহিন্দুরাই পেতে থাকে। তপশিলি সমাজের একজনকেও সরকারী বৃত্তি দেওয়া হয়নি। সুযোগের তালিকায় মুসলমানেরাও ছিল নগণ্য।   
     শ্যামা-হক মন্ত্রীসভার ঐ অপশাসনের বিরুদ্ধে তপশিলি সমাজের পক্ষ থেকে বাংলার তৎকালীন গভর্ণর জন্‌ আর্থার জি. সি. আই-ই-এর কাছে যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল অভিযোগ করেন। লীগের পক্ষ থেকে নাজিমুদ্দিনও একই অভিযোগ করেন। গভর্ণর অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে হকসাহেবেক প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন। অর্থাৎ দুর্নীতি পরায়ণ শ্যামা-হক মন্ত্রী সভার পতন ঘটে।
     শ্যামাপ্রসাদ, হিন্দুমহাসভা (বর্তমানে R.S.S.)-এর বর্ণহিন্দুগণ তপশিলি  সমাজের স্বার্থ রক্ষার প্রয়োজনে যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডলের এই সংগ্রামকে মেনে নিতে পারেনি। তাই শ্যামাপ্রসাদ, হিন্দুমহাসভা তথা বর্ণহিন্দুদের কাছে যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল মহাশত্রুতে পরিণত হন।
    
যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল অনুধাবন করলেন অখণ্ড বাংলায় প্রধানতঃ তপশিলি ও মুসলমান সম্প্রদায় সংখ্যাগরিষ্ঠ। অথচ প্রতি ক্ষেত্রে তপশিলি ও মুসলমানেরা উচ্চবর্ণের হিন্দুদের দ্বারা বঞ্চিত, শোষিত, নির্যাতিত ও অপমানিত।
 ১৯৪৩ সালের ২৮শে মার্চ বাংলার গভর্ণর ‘শ্যামা-হক’ মন্ত্রীসভা ভেঙ্গে দেন। পরবর্তীতে শ্যামাপ্রসাদ, হকসাহেবকে পুনঃরায় প্রধানমন্ত্রী করে নিজে ক্ষমতার কেন্দ্রে যাবার চেষ্টা করতে থাকেন। অপর দিকে লীগের এম.এল.এ.গণ নাজিমুদ্দিনকে বাংলার প্রধানমন্ত্রী করবার চেষ্টা করতে থাকেন।
    এমতো অবস্থায় যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল তপশিলি সমাজের উন্নতি ও অধিকার রক্ষায় সচেষ্ট হন। তিনি ২১ জন তপশিলি সমাজের এম.এল.এ.গণকে নিয়ে কলকাতার স্যাভয় হোটেলে অবস্থান করেন। তপশিলি সমাজের উন্নতি ও অধিকার রক্ষায় বিস্তর আলোচনা হয়। আলোচনার পর তপশিলি এম.এল.এ.গণ সর্বসম্মতভাবে কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সিদ্ধান্তের মধ্যে দৃঢ়ভাবে সিদ্ধান্ত হলো তপশিলি সমাজের উন্নতি ও অধিকার রক্ষার শর্তগুলি যে মন্ত্রীসভা মেনে নেবে তপশিলি এম.এল.এ.গণ সেই মন্ত্রীসভাকেই সমর্থন জানাবে।  
শর্তগুলি নিম্নরূপঃ-
 (১) তপশিলি জাতির তিনজন মন্ত্রী এবং তিন জন পার্লামেন্টারী সেক্রেটারী নিযুক্ত করতে হবে। *৫  
(২) তপশিলি জাতির শিক্ষার জন্য বার্ষিক পাঁচ লক্ষ টাকা রেকারিং মঞ্জুর ও কার্যকরী করতে হবে। * ৬
(৩) ‘কমিউনাল রেশিও (Communal Ration Rule)’ অনুসারে সকল চাকুরীতে তপশিলি জাতির প্রার্থী নিয়োগ করতে হবে।* ৭   
(৪) কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক আইন সভায়, District Board, Union Board, Municipality প্রভৃতি স্বায়ত্ত্ব শাসন মূলক প্রতিষ্ঠানে তপশিলি জাতির  সংখ্যানুপাতে নির্দিষ্ট সংখ্যক আসন সংরক্ষণ করতে হবে।*
(৫) ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিক্যাল কলেজে ছাত্র ভর্তির জন্য আসন সংরক্ষণ। * ৯
    স্যাভয় হোটেলে তপশিলি এম.এল.এ.গণ উক্ত শর্তের সমর্থনে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন। উক্ত দাবি যিনি মেনে নেবেন তাকেই নেতা মনোনীত করবার পক্ষে স্বাক্ষর করবেন।
    পরদিন শ্যামাপ্রসাদের নেতৃত্বে হকসাহেব স্যাভয় হোটেলে উপস্থিন হন। শ্যামাপ্রসাদ,  যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডলসহ অন্য তপশিলি এম.এস.এ.গণকে হক সাহেবকে নেতা মনোনীত করে স্বাক্ষর  করতে বলেন। যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডলের নেতৃত্বে তপশিলি এম.এল.এ.গণ তপশিলি জাতির উন্নতি ও  অধিকার রক্ষার পূর্বগৃহীত শর্তগুলি তুলে ধরেন। তখন শ্যামাপ্রসাদ বলেন,-“আগে দলপতি মনোনয়ন করুন, তারপর দাবির বিষয় বিবেচনা করা যাবে।” *১০ যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডলসহ তপশিলি  এম.এ্ল.এ.গণ আগে শর্ত মানা পরে নেতা মনোনীত করার সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন। তখন শ্যামাপ্রসাদ ‘দাবি মানা সম্ভব নয়’*১১  বলে হক সাহেবকে নিয়ে স্যাভয় হোটেল ত্যাগ করেন।   
     এখানে বিশেষভাবে লক্ষনীয় শ্যামাপ্রসাদ তপশিলি জাতির উন্নয়ন ও স্বার্থের জন্য কোনো শর্ত  মানেননি এবং হক সাহেবকেও মানতে দেননি। অর্থাৎ বাংলার তপশিলি সমাজের প্রধান শত্রু ছিলেন শ্যামাপ্রসাদ। বর্তমানে সেই শ্যামাপ্রসাদের দর্শনের মুখোশ R.S.S.এবং B.J.P.
    পরদিবস নাজিমুদ্দিন, সুরাবর্দি, সাহাবুদ্দিন লীগের পক্ষে স্যাভয় হোটেলে উপস্থিত হন।  যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডলের নেতৃত্বে তপশিলি এম.এল.এ.গণের পূর্ব গৃহীত সিদ্ধান্তের শর্তগুলি নাজিমুদ্দিন ও তাঁর সহযোগীগণ মেনে নিলেন। অবশেষে ১৯৪৩ সালের ১৯শে এপ্রিল ২১ জন তপশিলি এম.এল.এ. ও লীগের যৌথ সভায় নাজিমুদ্দিনকে নেতা মনোনীত করেন। নাজিমুদ্দিনকে নেতা   মনোনীত করে যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডলসহ ২১ জন তপশিলি এম.এল.এ. স্বাক্ষর করেন। ২৩শে এপ্রিল (১৯৪৩) সম্মিলিতভাবে গভর্ণরের নিকট সেই স্বাক্ষরিত কপি পেশ করেন। পরদিন অর্থাৎ ২৪শে এপ্রিল নাজিমুদ্দিন ১৩ জনের মন্ত্রী পরিষদ গঠনের মাধ্যমে বাংলার প্রধানমন্ত্রীর শপথ গ্রহণ করেন। (তৎকালীন সময়ে প্রাদেশিক শাসন কর্তাকে প্রধান মন্ত্রী বলা হতো, যেটা বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রী নামে পরিচিত)।
     শর্তমতো মন্ত্রীসভায় তিনজন তপশিলি মন্ত্রী হলেন-
(১) যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল
(২) প্রেমহরি বর্মণ
(৩) পুলিনবিহারী মল্লিক।
শর্তমতো তিনজন পার্লামেন্টারী সেক্রেটারী হলেন-
১) অনুকুলচন্দ্র দাস
২) বঙ্কুবিহারী মণ্ডল
৩) রসিকলাল বিশ্বাস।
    ১৯৪৩ সালের ২৬শে আগস্ট নাজিমুদ্দিন মন্ত্রীসভার বাজেট পাশ হলো। বাজেটে তপশিলি জাতির শিক্ষার জন্য বার্ষিক পাঁচ লক্ষ টাকা (বর্তমানের নিরিখে কয়েক কোটি টাকা) রেকারিং গ্রান্ট  মঞ্জুর হলো এবং সেটা কার্যকরী হলো। শুধু তাই নয়, Communal Ratio Rule অনুসারে বিদেশে তপশিলিদের উচ্চ শিক্ষার জন্য সরকারি বৃত্তি প্রদান হতে লাগল।  
      তপশিলি সমাজের জন্য শিক্ষার এই সুযোগ ও অধিকার পাওয়াটা শ্যামাপ্রসাদসহ বর্ণহিন্দুররা অশনি সঙ্কেত পেল। আর তখনই চক্তান্ত করে যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল কেন লীগ মন্ত্রীসভায় জোটবদ্ধ হলেন তা নিয়ে অপপ্রচার, কুৎসা রটনা শুরু করল। অথচ হকসাহেবের মন্ত্রীসভায় শ্যামাপ্রসাদ যখন ছিলেন, তখন তিনি শুধুমাত্র বর্ণহিন্দুদের স্বার্থ রক্ষার দূর্নীতি করেগেছেন। সেকথা বলা হলোনা। বর্তমান সময়ে তপশিলি সমাজের কিছু অকৃজ্ঞ শিক্ষিত স্বঘোষিত পণ্ডিত,  যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডলের অবদান অস্বীকার করছে। তারা বলতে পারছেনা যোগেন মোল্লা হলে শ্যামাপ্রসাদ মৌলবী।
    যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডলের চেষ্টায় প্রধানমন্ত্রী নাজিমুদ্দিনের মন্ত্রীসভার সৌজন্যে Communal Ratio Rule অনুসারে অর্থাৎ সংরক্ষণ মেনে তপশিলি জাতির প্রার্থীগণ সমস্ত বিভাগে চাকুরী পেতে লাগলেন। ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, সাব-ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, মুন্‌সেফ, কোঃ অপারেটিভ ইন্সপেক্টর,  সাবরেজিস্ট্রার নিযুক্ত হন। যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডলের সুপারিশে বহু তপশিলি প্রার্থী রাইটার্স বিল্ডিংয়ে চাকুরী পান। ঐসব চাকুরীতে বর্ণহিন্দুদের একচেটিয়া অধিকার ছিল। যোগেন্দ্রনাথ মন্ডলের প্রয়াসে তপশিলি সমাজের শিক্ষাও চাকুরিতে অধিকার বর্ণবাদীরা মেনে নিতে পারলনা। তাই তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, অপপ্রচারের কারিগর বর্ণহিন্দু তথা ব্রাহ্মণ্য সমাজ।
    এতো প্রচেষ্টার মধ্যে ১৯৪৩ সালে ফুড রেশনিং বিভাগের চাকুরীতে Communal Ratio Rule অর্থাৎ সংরক্ষণ মানা হচ্ছিলনা। ফলস্বরূপ তপশিলি চাকুরী প্রার্থীগণ বঞ্চিত হতে থাকে। মোর্চার পার্টি মিটিং-এ এবিষয়ে যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল নাজিমুদ্দিনের দৃষ্টিগোচর করে বলেন,- Communal Ratio Rule যদি অন্যান্য বিভাগে না মানা হয়, তবে আমার বিভাগেও ইহা মানিবনা। আমি আমার বিভাগে একটি চাকুরিও মুসলমান কিংবা বর্ণ হিন্দুকে দেবনা। সমস্ত চাকুরী তপশিলি জাতির প্রার্থীগণকে দিয়ে অন্য বিভাগের ক্ষতিপূরণ করিব।”*১২    
    এরূপ মন্তব্যে হামিদুলহক চৌধুরীসহ লীগের প্রভাবশালী সদস্যগণ ক্রুদ্ধ স্বরে যোগেন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে বাক্য প্রয়োগ করতে থাকেন। তখন যোগেন্দ্রনাথও অনুরূপ ক্রুদ্ধ কন্ঠে বলেন- “মিঃ হামিদুলহক চৌধুরী, লাল চোখ দেখাবেন না। লাল চক্ষু আমাদেরও আছে। আমি মন্ত্রীত্ব করি, চাকুরী নহে, এ মন্ত্রীত্ব কাহারও দেওয়া দান নহে। যে সুখের ঘর বেঁধে দিয়েছি, প্রয়োজন হলে চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে তা ভেঙ্গে দিতে পারি।” *১৩  
    মোর্চার পার্টি মিটিংয়ে তখন যুদ্ধংদেহী পরিস্থিতি। প্রধানমন্ত্রী ২০ মিনিট সভা স্থগিত ঘোষণা করলেন। সভার সন্বিহিত একটি কক্ষে প্রধানমন্ত্রী নিজামুদ্দিন ও সুরাবর্দি সাহেব পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলেন। পুনঃরায় সভার শুরুতে যোগেন্দ্রনাথের অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে নাজিমুদ্দিন প্রতিকারের আশ্বাস দেন। পরবর্তী সময়ে Communal Ratio Rule মেনে তপশিলি প্রার্থীদের ফুড রেশনিং বিভাগে প্রচুর চাকুরী হয়।
শুধু তাই নয়, যোগেন্দ্রনাথের নেতৃত্বে তপশিলি এম.এল.এ.গণ-তপশিলি সমাজের চাকুরীপ্রার্থীগণের  শিক্ষাগত যোগ্যতা ও কে কি চাকুরী প্রার্থী সে তালিকা প্রস্তুত করে বিভিন্ন দপ্তরে পাঠাতেন। বিনা ইন্টারভিউতে তাঁরা বিভিন্ন দপ্তরে সুপারিশের বিনিময়ে চাকুরী পেয়েছেন। তপশিলি সমাজের  উন্নতির অধিকার রক্ষার স্বপক্ষে বাংলায় যোগেন্দ্রনাথের মতো প্রভাবশালী আর কেহ ছিলেন না।  
    বাংলার তপশিলি সমাজের উত্থানের নায়ক ও মুক্তির দূত যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডলকে শ্যামাপ্রসাদসহ বর্ণহিন্দুদের ব্যানার হিন্দুমহাসভা(বর্তমানে R.S.S.) ও কংগ্রেস শেষ করে দিতে ষড়যন্ত্র শুরু করল।
অতএব স্পষ্টভাবেই বলা যায় ‘যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডলকে রাজনৈতিকভাবে শেষ করতে না পারলে তপশিলি সমাজের অগ্রগতি কোনোভাবে ঠেকানো যাবেনা’- এই চরম সত্য উপলব্ধি করেই   শ্যামাপ্রসাদ ও কংগ্রেস বাংলাভাগ করে নিল। তপশিলি সমাজের বৃহৎ অংশ এই সত্যটি এখনো বুঝতে বা উপলব্ধি করতে পারলেন না।
________________
(সহায়ক গ্রন্থ-
*(১)(৮) এবং (৯) মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ, ১ম খণ্ড, লেখক- জগদীশচন্দ্র মণ্ডল পৃ. ৯০; প্রকাশক –চতুর্থ দুনিয়া, স্টল ২২ ভবানী দত্ত লেন। কলকাতা- ৭৩.  
* (২)&(৩) ঐ পৃ. ৯৩  
* (৪) ঐ  পৃ. ৮৭   
* (৫),(৬)এবং(৭) ঐ পৃ. ১০২
* (১০)ও (১১) ঐ পৃ. ১০৩
* (১২) ও (১৩) ঐ পৃ. ১১০   
এছাড়া অন্য সহায়ক গ্রন্থ- বাংলাভাগ হল কেন? লেখক –নিকুঞ্জবিহারী হাওলাদার।)


0 comments:

Post a Comment