ডাঃ সি, এস, মীডের সংক্ষিপ্ত জীবনী
ডাঃ সিসিল সিলাস মীড,(১৮.১০.১৮৬৬ ১৭.৬.১৯৪০)
(সৌজন্যে- শ্রীশ্রী গোপালচাঁদ চরিত্র সুধা। লেখক_ শ্রী শ্রীকান্ত ঠাকুর।
সম্পদনায়- ডাঃ সুধাংশু শেখর মালাকার, পৃষ্ঠাসংখ্যা-৩৪৩-৩৪৪)
দক্ষিণ
অস্ট্রেলিয়ার এডিলেড শহরে ১৮৬৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ই অক্টোবর তাঁর জন্ম হয়। তাঁর
মৃত্যু হয় দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার এডিলেড শহরে ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ই জুন। তিনি
ছিলেন ভারতের পূর্ব বাংলায় ব্যাপ্টিস্ট মেডিক্যাল মিশনারী। তাঁর পিতার নাম সিলাস
মীড,
যিনি এডিলেড শহরের ফ্লিন্ডার স্ট্রীট ব্যাপ্টিষ্ট চার্চে
থাকতেন। এখানেই তিনি খ্রিষ্টান ধর্মে দীক্ষিত হন, অর্গান বাদক হয়ে যান এবং গীর্জার গায়ক দলের মাস্টার হয়ে যান। তিনি প্রিন্স
আলফ্রেড কলেজ ও এডিলেড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন। ১৮৮৭ খ্রিষ্টাব্দে বি. এ. পাশ
করেন। ১৮৯১ খ্রিষ্টাব্দে এম.বি;বি.এস-এ
স্বর্ণমেডাল পেয়ে পাশ করেন (এখানে স্মরণীয়, বাবাসাহেব ডঃ বি.আর. আম্বেদকর সেই ১৮৯১ খ্রিষ্টাব্দেই ১৪ই এপ্রিল জন্মগ্রহণ
করেন।)
ডাঃ সুভাস
চন্দ্র বিশ্বাস লিখিত “অস্ট্রেলিয়ার ড. সি,এস,মীডের জীবন কাহিনী” গ্রন্থের ৮ পৃষ্ঠার ড. সি.এস. মীডের জন্ম তারিখ লেখা আছে
১৬ অক্টোবর ১৮৬৬ খ্রিঃ।
* Miss. mead ১৯২৫ খ্রি. মারা যান (পৃষ্ঠা : ৩৭)।
* ১৯২১ সালের ডিসেম্বর মাসে ওড়াকান্দি তথা ভারত ত্যাগ (পৃষ্ঠা: ৪৯- মীডের চিঠি) ।
* মৃত্যু ১৭ই জুন ১৯৪০ খ্রিঃ। মৃত্যুকালে বয়স ৭৪ বছর ৬ মাস ২১ দিন (পৃষ্ঠা ৩৯) ।
* ডাঃ সি. এস. মীডের বাড়ির ঠিকানা ৬৫, Finder Street, Near Victoria Square,
Adelaide, Asutralia.
১৯০৬ সালে ওড়াকান্দি আমন্ত্রণ, ১৯০৬ সালে ফরিদপুরে।
দক্ষিণ
অস্ট্রেলিয়ার ব্যাপ্টিস্ট ইউনিয়ন পরিচালিত ফরিদপুর মিশনের চাকুরিতে যোগদান করেন
ডাঃ সি.এস.মীড। তিনি ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দে ভারতে আগমন করেন। বৃহত্তর পাবনা ও ফরিদপুরে
মেডিক্যাল মিশনারী হিসেবে কাজ করেন। ১৮৯৬ খ্রিষ্টাব্দে এ্যালিস পাপ্পিন নাম্নী
অস্ট্রেলিয়ার প্রথম দিককার এক ব্যাপ্টিস্ট মিশনারীকে বিয়ে করেন। তাঁদের ছিল দুই
মেয়ে ও এক ছেলে। ছেলেটি শৈশবেই মারা যায়। ২ কন্যার নাম কুমারী ডরথী ও কুমারী
মার্জ্জরী (পি.আর.ঠাকুরের ‘আত্মচরিত’ পৃঃ ৫৬)। মীড সাহেব বাংলায় অনর্গল কথা বলতে পারতেন এবং
তিনি ছিলেন মুক্ত মাঠের ক্লান্তিহীন ধর্মপ্রচারক। তিনি স্থানীয় ভাষায় প্রচার
পুস্তিকা ও ছন্দোবদ্ধ স্তব স্তোত্র ও ধর্মীয় সঙ্গীত রচনা করতেন। বঙ্গদেশে তিনি
ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাপ্টিস্ট মিশন ফেডারেশনের সকল ক্রিয়া কর্মের চালিকা শক্তি। সামাজিক
ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার সিডুল্ড কাস্ট
নমঃশূদ্র সম্প্রদায়ের আমন্ত্রণ পান ১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দে। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ, ১৯০৬ সালে শ্রীধাম ওড়াকান্দিতে ডাঃ সি.এস.মীডের আগমন।
কয়েকটি অস্ট্রেলীয় এবং ভারতীয় মিশনের কর্মীবৃন্দ গুরুত্বপূর্ণ নমঃশূদ্র কেন্দ্র
ওড়াকান্দি গ্রামে যান এবং ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দে ডাঃ সি.এস.মীডের নেতৃত্বে
কর্মীবাহিনীও সেখানে যান। বহু বাধা পেরিয়ে ওড়াকান্দি গ্রামে ৫ বিঘা জমি অর্জন করেন
এবং সেখানে মিশন , অনেক স্কুল, একটি দাতব্য চিকিৎসালয়, একটি বিধবা নিবাস, একটি চার্চ এবং তার
কর্মীবাহিনীর আবাসন গৃহাদি তৈরি করেন। যদিও এসব করেও মিশনারীদের উচ্চাশার সব কিছু
পূরণ করতে পারেন নি কিন্তু একটা পর্যায়ে এসে বাংলার যে কোনো চার্চের চেয়ে
ওড়াকান্দি চার্চের সদস্য সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ছিল। এখানেই অস্ট্রেলিয়ান
ব্যাপ্টিস্টগণ তাদের কাজকর্ম চালাতেন। নমঃশূদ্রদের
মধ্যে কাজ করার জন্য ডাঃ সি.এস. মীডকে কাইজার-ই-হিন্দ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।
স্বাস্থ্য ভেঙ্গে পড়ার কারণে তিনি ১৯২১
খ্রিষ্টাব্দে অবসরে যেতে বাধ্য হন। এবং অস্ট্রেলিয়ার এডিলেড শহরে গিয়ে বাস
করার সময়ে এডিলেড বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল স্কুলের স্টাফ হিসেবে কাজে যোগদান
করেন। ব্যাপ্টিস্ট মিশনের দক্ষিণ অস্ট্রেলীয় সেক্রেটারী হিসেবে উদ্বুদ্ধকারী
প্রচারক ও লেখক হিসেবে মিশনারী স্বার্থের উন্নয়ন প্রক্রিয়া অগ্রগামী করে চলেন।
W.Barry লিখিত There Was A Man (Melbourne. Nd.) GERARD B. BALL-এর বর্ণনা
অনুযায়ী প্রাপ্ত। সাউথ ক্রস কলেজ, ২০০৪,
ইলেক্ট্রনিক ভারসান এটি, Evangelical
History Association O Australia and the author, 2004 Gi content.
প্রসঙ্গ ডাঃ সি.এস. মীড
ডাঃ সিসিল
সিলাস মীড, সংক্ষেপে ডাঃ সি.এস.মীড, একজন অস্ট্রেলীয় মিশনারী ডাক্তার। ব্রিটিশ ভারতে তিনি এখানে
এসেছিলেন ১৯০৪ খ্রিষ্টাব্দে। শিক্ষা, চাকুরী, আত্মসম্মান এবং সামাজিক ন্যায়বিচার
পেতে তিনি নমঃশূদ্র সম্প্রদায়কে প্রভূত সাহায্য ও পথনির্দেশনা দান করেছিলেন। আজকাল
অনেকে বলে থাকেন মিশনারীদের একমাত্র লক্ষ্য গরীব মানুষদের খ্রিষ্টান বানানো।
কিন্তু কতজন নমঃশূদ্র খ্রিষ্টান হয়েছেন? তথাকথিত উচ্চবর্ণদের চেয়ে কম। তিনি এ রকম একজন মহান ব্যক্তি। মনেপ্রাণে একজন
সত্যিকার খ্রিষ্টান ব্যাপ্টিস্ট। ভারতীয় সংস্কৃতির বৈষম্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার
জন্য একটি সমাজকে প্রস্তুত করেছিলেন। শিক্ষিত সমাজ যাঁদের ত্যাগ করেছিল, শাসকেরা যাঁদের কথায় কর্ণপাত করেনি, তাঁদের দায়িত্ব তিনি নিজ কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। দুঃখজনক
ব্যাপার হল এই উপমহাদেশের লোকেরা তাদের সমস্ত প্রচেষ্টার দ্বারা সেই সব মানুষদের
আর্থসামাজিক উন্নয়নের আন্দোলনের বদলে তাদেরকে প্রচণ্ডভাবে কোণঠাসা করে রেখেছিল।
এতে ভারত ধর্মীয় জাতবৈষম্যের দেশের তালিকায় নথিভুক্ত হয়ে গেছে।
Dr. C.S. Mead-এর জীবনী Walter Barry “There Was a man”. তাঁর মৃত্যুর ৫ বছর পরে লেখা।
সংক্ষিপ্ত সার
শিক্ষা, সঙ্গীত এবং খেলাধুলার বিভিন্ন ক্ষেত্রে ডাঃ সিসিল সিলাস মীড
অসামান্য সাফল্য অর্জন করেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ায় পুরস্কার প্রদানের ইতিহাসে এ
পর্যন্ত সার্জারীতে প্রথম সোনার মেডেল তিনিই পেয়েছিলেন চিকিৎসা বিজ্ঞানের
ছাত্র হিসেবে। তথাপি তিনটি ক্ষেত্রে নিশ্চিত উজ্জ্বল আশাপ্রদ জীবন ছেড়ে
তিনি ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দে একজন মিশনারী ডাক্তার হিসেবে পূর্ববঙ্গে (বর্তমানের
বাংলাদেশে) চলে আসেন। তথাকথিত উচ্চজাতের মধ্যে ধর্মযাজকত্ব শেষে ঈশ্বরের ডাকে সাড়া
দিয়ে স্ত্রী ও দু’টি ছোট মেয়ে নিয়ে
বঙ্গের গাঙ্গেয় বদ্বীপের জলাভূমিতে বসবাসরত সমাজবাহ্য নমঃশূদ্রদের মধ্যে বসবাস ও
যাজকত্ব করার জন্য এলেন। তাঁদের জীবনে প্রচণ্ড পরিবর্তন আনার কারণে - বাস্তব এবং
আধ্যাত্মিকভাবে - ভারতের ভাইস্রয় তাঁকে রূপার মেডেল দিয়ে পুরস্কৃত করেন।
শ্রী সুভাষ বিশ্বাস লিখিত ‘অস্ট্রেলিয়ার ডঃ সি. এস মীডের জীবন কাহিনী’ গ্রন্থের ৪৪-৪৫ পৃষ্ঠা ডঃ সি.এস মীডের বাড়ির ঠিকানা ও
বর্ণনা।
জন্ম - ১৬ই অক্টোবর ১৮৬৬, পিতা-সিলাস মীড M.A. LLB. ৫ আগস্ট ১৮৬১ প্রতিষ্ঠিত ফিল্ডার স্ট্রীট ব্যাপটিস্ট
মিশনারির প্রথম ধর্মযাজক। বিবাহ- মিস স্টাপেলের সঙ্গে। মৃত্যু-১৭ই জুন ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দ। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর ৬ মাস ২১ দিন।
মিসেস মীড মারা যান ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে। মীডের ২ মেয়ে- বড় Miss Dorothy, ছোট মেয়ে মারজেরী, কোন ছেলে নেই - পৃষ্ঠা ২৩। ডাঃ মীডকে সাহায্য করতেন Mrs. Mead এবং Miss. Bertha Tuck, Miss Alice Pappin. এ্যালিস প্যাপিন সাউথ অস্ট্রেলিয়ার উইলিয়ামস্টোনে-এ জন্মগ্রহণ করেন -
পৃষ্ঠা ১৯। ২৯ বছর ৪ মাস বয়সে ডাঃ মীড বিয়ে করেন ২৪ ফেব্রয়ারি ১৮৯৬-এ অন্ধ্র
প্রদেশের Ongole-এ বসে, কোলকাতা থেকে ১৩৭০ কি. মি দক্ষিণে, মাদ্রাজ থেকে ২৯৩ কি. মি উত্তরে - পৃষ্ঠা ১৮। Octaober, ১৮৯৩-এ যখন মীড ফরিদপুরে এলেন তখন ফরিদপুর মিশনারি সেন্টারে
ছিলেন Miss Arnold, Miss Gilbert, Miss Alice Pappin, Miss
Parsous, Miss Tack & Miss Archer. ৮ বছর বয়সে C.S. Mead-কে প্রিন্স আলফ্রেড কলেজে ভর্তি করেন। ১৮৮২ সালে Scholarship, ১৮৮৭-তে B.A,
ঐ সালেই এডিলেড মেডিকেল কলেজে ভর্তি, ১৮৮৯ সালে M.B; Ch. B ডিগ্রি লাভ।
M.B
= Bachelor of Medicine; Ch. B=Chiruragiae
Baccalaures (Bachelor of Surgery) 1st class Hons. ৩০
বছর মানুষের সেবার পর Dr. Mead নিজেই হাঁপানীতে আক্রান্ত-
পৃষ্ঠা ৩২
১৯২১ সালের
ডিসেম্বর মাসে চিরকালের জন্য ওড়াকান্দি ত্যাগ- গুরুচাঁদকে চিঠি পৃষ্ঠা ৪০।
0 comments:
Post a Comment