হরিলীলামৃত ১ম সংস্করণ । বাংলা ১৩২৩ সাল ।পৃষ্ঠা নং-১২ দ্বিতীয় তরঙ্গ । বিষয়ঃ- মহাপ্রভুর পুর্ব পুরুষদের বিবরণ । তুলে দিলাম । এখানে মৈথিলী ব্রাহ্মণ কোথায় লেখা আছে ? জানাবেন কি ?
নাম ছিল রামদাস, রাড় দেশে বাস,
তীর্থযাত্রা করি বহুদিন ।
স্ত্রী পুরুষ দুই জনে,
শেষে যান বৃন্দাবনে,
কৃষ্ণ প্রেমে হ'য়ে উদাসীন ।।
কৃষ্ণ নাম উচ্চারণে, ধারা বহিত নয়নে,
হেরিলে পবিত্র হয় জীব ।
কাশী কাঞ্চী মধুপুরী,
সরস্বতী গোদাবরী,
শান্তিপুর আদি নবদ্বীপ ।।
বিষয় সম্পত্তি ত্যজে,
তীর্থ-যাত্রা পদব্রজে,
পরে যান শ্রীচন্দ্রশেখর ।
নব গঙ্গা নাম শুনি, দেখিবারে সুরধুনী,
লক্ষীপাশা এল তার পর ।।
কৃষ্ণভক্ত শিরোমণি, সবলোকে ধন্য মানি,
যত্ন করি রাখিল তথায় ।
কৃষ্ণ ভকতের সঙ্গে, প্রেমকথা রসরঙ্গে,
থাকিলেন শ্রীলক্ষ্মী পাশায় ।।
চন্দ্রমোহন তার পুত্র, ক্রমে শুন
তার সূত্র,
তার পুত্র সুকদেব
নাম ।
লক্ষী পাশার উত্তর, নব গঙ্গা নদী পার,
বাস করে জয় পুর গ্রাম ।।
তস্য পুত্র কালী দাস, বহু দিন কৈল বাস।
তিনি যান পাথর ঘাটায় ।
রবিদাস
নিধিরাম, কনিষ্ঠ শ্রীজীব নাম,
তিন পুত্র সহিত তথায় ।।
সর্বদায় সাধু সেবা, সংকীর্ত্তন রাত্রি
দিবা,
মাঝে মাঝে বাণিজ্য করিত ।
যাহা করে উপার্জ্জন, তাহাতে সাধু সেবন,
ক্ষেত্র কার্য্য অল্প
পরিমিত ।।
একদিন কৃষ্ণধ্যানে, তুলসী বেদীর স্থানে,
বসিয়াছে কালিদাস যিনি ।
করে করে মালা জপ, অপরে কৃষ্ণ আরোপ,
হেন কালে হ'ল দৈববানী ।।
সাধু সেবা যে দিনেতে, হ'বে তব ভবনেতে,
এই বিলে আছয় প্রস্তর।
আসিয়া বিলের কূলে, দাড়াইও হরি বলে,
ভূরি ভূরি উঠিবে পাথর ।।
সে সব পাথর ল'য়ে,
নিজ ভবনেতে গিয়ে,
সাধু সেবা করিও যতনে ।
সাধু সেবা হ'লে প'রে, লইয়ে বিলের তীরে,
সে পাত্র রাখিও পূর্ব স্থানে
।।
এরূপ করেন তিনি, গ্রাম্য লোকে তাই
শুনি,
মহোৎসব হ'লে কোন ঠাই ।
প্রস্তর লইব বলে, দাঁড়া'ত বিলের
কূলে,
দিয়াকালিদাসের দোহাই ।।
সে সব পাথর ল'য়ে,
আনিয়া নিজ আলয়ে,
ভোজন করায় লোক সবে ।
লোকের ভোজন পরে, আনিয়া বিলের তীরে,
পাথর রাখিলে যায় ডুবে ।।
পুরাতন লোকে জানে, সেই বলের দক্ষিণে,
পাবুনে গ্রামের ছিল নাম ।
পাথর আসিত ঘাতে, যে ঘাটে পাথর উঠে,
হইল পাথরঘাটা গ্রাম
।।
এক বাটী এক দিনে, সেসব পাথর এনে,
বহু লোক ভোজন করায় ।
প্রস্তর ঘাটেতে এনে, রেখে গেল সেইস্থানে,
একখানি পাথর না দেয় ।।
সন্ধ্যা হইল উত্তীর্ণ, সেই
পাথরের জন্য,
হু হু শব্দ উঠিতেছে জলে ।
বিলের যত পাথর, সবে হ'য়ে একত্তর,
সেই জল বৃদ্ধি হ'য়ে চলে ।।
যে ঘরে পাথর ছিল, জলেতে ভাঙ্গিয়া নিল,
মধুমতী নদীর মাঝেতে ।
দেবশিলা স্বপ্না দেশে, বলে
গেল কালিদাসে,
কলুষ পশিল এ গ্রামেতে ।।
সে কালিদাসের সুত, নিধিরাম জ্যেষ্ঠ পুত্র,
তিনি হন পরম নৈষ্ঠিক ।
শ্রীনিধিরামের ঘরে, দুই পুত্র জন্ম ধরে,
মোচন রাম কনিষ্ঠ
কার্ত্তিক ।
জ্যেষ্ঠ শ্রিমোচন রাম, অশেষ গুণের ধাম,
ঠাকুর মোচাই নামে খ্যাত ।
সফলা নগরী এসে,
বাস করিলেন শেষে,
পঞ্চ পুত্র ল'য়ে আনন্দিত ।।
যশোমন্ত সনাতন, প্রাণকৃষ্ণ রাম মোহন,
রণকৃষ্ণ এ পাঁচ সন্তান ।
সর্ব জ্যেষ্ঠ যশোমন্ত, তার হ'ল পঞ্চ
পুত্র,
এ পঞ্চের ঠাকুর আখ্যান
।।
এ বংশে জন্মিল যত, শুদ্ধ শান্ত কৃষ্ণ ভক্ত,
সবে মত্ত হরি গুণ গানে ।
কৃষ্ণ ভক্তির গুনে, তার এক এক জনে,
সাধু কি বৈষ্ণব সবে
মানে ।।
এ কয় পুরুষ মাঝে, মত্ত সাধু সেবা কাজে,
কৃষ্ণ প্রেম ভক্তি
নিরবধি ।
কেহ বা হ'ল সন্ন্যাসী, কেহ বৃন্দাবনবাসী,
তাতে বংশে ঠাকুর উপাধি ।।
ঠাকুরের এ বংশেতে, হরি চাঁদ অবনীতে,
করিলেন জনম গ্রহণ ।
কহিছে তারকচন্দ্র, অবতীর্ণ হরিসচন্দ্র,
হরি হরি বল সর্বজন ।।
_______________________________________________
This comment has been removed by the author.
ReplyDelete