মূলনিবাসী রাজা অসুর
দুর্গা উৎসব না অসুর নিধন যজ্ঞ ? কে এই অসুর ? সত্যিই কি অসুর অশুভশক্তির প্রতিক ? নাকি প্রকৃত অশুভশক্তির লোকেরা তাদের প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠিত করার জন্য মুলনিবাসী মহান রাজাকে বা তাদের বংশধরদের মহান কর্মকে লুকিয়ে রেখে উল্টা তাদের বদনাম করছে ?
এ বিষয়ে সঠিক জ্ঞান অর্যনের জন্য -
-মনি মোহন বৈরাগীর লেখা বই-
বৌদ্ধ ও মতুয়া ধর্মের আলোয় অবৈদিক ধর্মীয় সামাজিক সংস্কৃতি-এর থেকে তুলে দিলাম (পৃ:নং (17,18)
বিষয়:- অতীত অন্ধকারে চাপা পড়া ভারতীয় ইতিহাস ও ধর্মসংস্কৃতি-র সমীক্ষা ও পর্যালোচনা
দুর্গা উৎসব না অসুর নিধন যজ্ঞ ? কে এই অসুর ? সত্যিই কি অসুর অশুভশক্তির প্রতিক ? নাকি প্রকৃত অশুভশক্তির লোকেরা তাদের প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠিত করার জন্য মুলনিবাসী মহান রাজাকে বা তাদের বংশধরদের মহান কর্মকে লুকিয়ে রেখে উল্টা তাদের বদনাম করছে ?
এ বিষয়ে সঠিক জ্ঞান অর্যনের জন্য -
-মনি মোহন বৈরাগীর লেখা বই-
বৌদ্ধ ও মতুয়া ধর্মের আলোয় অবৈদিক ধর্মীয় সামাজিক সংস্কৃতি-এর থেকে তুলে দিলাম (পৃ:নং (17,18)
বিষয়:- অতীত অন্ধকারে চাপা পড়া ভারতীয় ইতিহাস ও ধর্মসংস্কৃতি-র সমীক্ষা ও পর্যালোচনা
প্রাগার্য তাম্র যুগে
অর্থাৎ ৫০০-১৫০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত সময়ে
সাম্যবাদী পূর্ববুদ্ধ সনাতনী ভারতবর্ষের অতীত ইতিহাস বড়ই অন্ধকারাচ্ছন্ন । কারণ
স্বার্থান্বেষী নর্ডিক আর্যরা ভারতীয় সনাতনী পূর্ববুদ্ধদের যাবতীয় ইতিহাসই ধ্বংস
করে দেয় । তবে নর্ডিক আর্য আগমনের বহু পূর্বে অর্থাৎ খ্রীষ্টপূর্ব প্রায় ৫০০
বৎসর পূর্বে আলপাইন মানবগোষ্ঠীর পূর্ববুদ্ধ সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষেরাই
ভারতবর্ষের সিন্ধুনদকে কেন্দ্র করে যে নগরকেন্দ্রিক সভ্যতার বিকাশ ঘটিয়েছিলেন
উহাই সিন্ধু সভ্যতা নামে খ্যাত । এই আলপাইন মানবগোষ্ঠীর এক বৃহত্তম অংশকে আবার
অসুর জাতিও বলা হয় । ভারতীয় প্রাচীন হিন্দুধর্ম গ্রন্থগুলিতে বারবারই এই অসুর
জাতির উল্লেখ পাওয়া যায় । আবার প্রাচীন পারস্যের অসুর সভ্যতাই ছিল বিশ্বের এক
বিস্ময় । কারণ একথা ঐতিহাসিক ভাবেই সত্য যে তাম্রযুগে আবার প্রাচীন পারস্যের এই
অসুর সভ্যতাই হল বিশ্বের প্রথম নগরকেন্দ্রিক সভ্যতা । ‘আর
যে সময়ে তথাকথিত পশুপালক নর্ডিক আর্যরা ছিলেন ভারতীয় অসুরদের কাছে যাযাবর পশু-মানব
বলেই গণ্য।’(ভোলগা থেকে গঙ্গা; রাহুল
সাংকৃত্যায়ন; অষ্টম মুদ্রণ;সেপ্টেম্বর’২০০৫;পুরুধান; পৃ:৬৫) সিন্ধু
সভ্যতা প্রবর্তনের সমসাময়িককালে এই অসুর জাতির এক বৃহত্তম অংশ পূর্ব ভারতেও এক
নতুন সভ্যতা প্রবর্তন করেন । বগুড়ার করতোয়ানদী কূলে অবস্থিত মহানগড়ের
ধ্বংসাবশেষই এ সত্যের প্রকৃত প্রমাণ । তাই দেখা যায়, পশ্চিম
ভারতে সিন্ধুনদকে কেন্দ্র করে আলপাইন মানবগোষ্ঠীর অসুর জাতির দ্বারা যেমন গড়ে
উঠেছিল নগরকেন্দ্রিক সিন্ধু সভ্যতা,
ঠিক সমসাময়িক কালে
অনুরূপভাবে পূর্বভারতেও কেবলমাত্র আলপাইন অসুর জাতির দ্বারা করতোয়া এবং গঙ্গা
নদীকে কেন্দ্র গড়ে উঠেছিল উন্নত নগরকেন্দ্রিক আর এক অসুর সভ্যতা । যার অধীশ্বর
ছিলেন আলপাইন মানবগোষ্ঠীর অসুর জাতির গর্বিত কোল, শরব, পুলিন্দ,
ডোম, চন্ডাল(নম:), পৌন্ড্র, কৈবর্ত্য, ইত্যাদি
সম্প্রদায় সমূহ । অতীত বঙ্গ রাজ্যে ছিল যেমন নম:দের
(চন্ডাল) আধিপত্য, আসামের
কামরূপে ছিল কৈবর্ত্যদের আধিপত্য, তেমনি পৌন্ড্রদের আধিপত্য
ছিল পৌন্ড্র রাজ্যে । সপ্তম শতকেও কামরূপের রাজারা দানবাসুর, হাটকাসুর, সম্বরাসুর, রত্নাসুর, নরকাসুর
প্রভৃতি অসুরদের পূর্বপুরুষ বলে পরিচয় দিতেন । মহাভারতের আদি পর্বেই দেখা যায়
অসুররাজ বলির পাঁচ পুত্রের নামানুসারে পূর্বভারতের পাঁচটি রাজ্যের নামকরণ হয়
যথাক্রমে -অঙ্গ(পূর্ব বিহার), বঙ্গ, কলিঙ্গ(সুবর্ণরেখা নদী থেকে
গোদাবরী নদী পর্যন্ত বিস্তৃত উড়িষ্যা ও অন্ধ্রের কিছু অংশ),সুহ্ম
ও পুন্ড্র (দক্ষিণ বঙ্গ) ।এছাড়া প্রাচীন
বৌদ্ধগ্রন্থ ‘আর্য মঞ্জুশ্রী মূলকল্প’-তেও
বলা হয়েছে বঙ্গদেশের মানুষ অসুর ভাষাতেই কথা বলে । “অসুরানাং
ভবেত বাচা গৌড়পুন্ড্রোদ্ভবা সদা” । ড: নীহার রঞ্জন রায় তাঁর ‘বাঙ্গালীর ইতিহাস ’ গ্রন্থেও
এ কথা স্বীকার করেছেন । বৈদিক যুগে আর্যরা বিহারের মিথিলা পর্যন্ত দখল করলেও শেষ
পর্যন্ত তারা পূর্ব ভারতের আলপাইন মানবগোষ্ঠীর অসুর জাতির কাছে বারবার পরাজিত হয়ে
পূর্বভারত দখলের যাবতীয় স্বপ্ন ত্যাগ করতে বাধ্য হয় । কারণ এই অসুর জাতির যেমন
ছিল এক বিশাল হস্তীবাহিনী তেমনি ছিল তাদের শক্তিশালী এক রাজতন্ত্রও। ঐতরেয়
ব্রাহ্মণে(১/১৪)
এই অসুর জাতির রাজতন্ত্রের
মধ্যে একমাত্র প্রাচ্যদেশেই এই একরাট বা সম্রাট ব্যবস্থার প্রচলন ছিল । যেহেতু
অসুর রাজতন্ত্রের সর্বাধিনায়ককে সম্রাট বলা হত সেহেতু বৌদ্ধ যুগে অসুর জাতির
বংশধর হিসাবে সম্ভবত: মৌর্য শাসকদের
সর্বাধিনায়কের উপাধীও ছিল সম্রাট । তবে সুচতুর নর্ডিক আর্যরা, পরাজিত
আলপাইন অসুর জাতির লোকদের দেবতার ভয়ে ভীত করে চিরদিনের মত দাবিয়ে রাখতে তাদেরই
সৃষ্ট কাল্পনিক দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটিয়ে এই অসুরদের রাজত্ব বঙ্গদেশে
ব্যাপকভাবে দুর্গাপূজার প্রচলন করেন;
যা ভারতবর্ষের আর কোন
রাজ্যে দেখা যায় না । কাল্পনিক এই দুর্গার আসরে অসুরদের এমন ভাবে তারা অত্যাচারী
এবং অশুভ শক্তির ধারক ও বাহকরূপে প্রকাশ করেন যাতে ভবিষ্যতে কোন বাঙালি যেস ঘৃণা
ভরে কোনদিনও জানতে না চান যে আসলে তারাই হল আলপাইন অসুর জাতির মানুষ । কখনও যেন
তাদের মনে এ প্রশ্ন না আসে যে অসুর নামে কোন মানবজাতি সত্যিই কোন দিন ছিল কি না-আর
যদি থাকে তবে কারাইবা ছিল এই অসুর জাতির মানুষ,
কিইবা ছিল তাদের ধর্ম ।………………
sunri ra ki mulnivasi noi? tader sonkhya ki kom? tader kothao itihas nei keno
ReplyDelete