যে কোন প্রকার সামাজিক জাগরণের কাজকেই আমরা
সামাজিক আন্দোলন বলে মনে করতে পারি । তো এই আন্দোলন কিভাবে চালাতে হবে তার
বিস্তারিত বর্ননা করা হ'ল । আন্দোলন কে চালাতে
পারে ? আর কে
চালাতে পারেনা ? সংগঠনের মাধ্যমে আমরা এই দেশের মাধ্যমে এক
নতুন স্বতন্ত্র আন্দোলনের নির্মান করতে চাই । এই আন্দোলন করার জন্য আন্দোলনকারী
কর্মকর্তাদের কিছু বিষয় জানা মহত্বপূর্ণ । এর প্রথম বিষয় হচ্ছে-
আন্দোলন কে চালাতে পারে ? এবং কে আন্দোলন চালাতে পারেনা ?
এ বিষয়ে আন্দোলনকারী কর্মকর্তাদের জানকারী
থাকা দরকার । অনেক বার এরকম হয় যে,
আমরা যাদের প্রতি আশা করি
যে তাঁরা আন্দোলন চালাবেন; কিন্তু তাঁরা আন্দোলন
চালাতে পারেন না । তখন আমাদের মধ্যে নিরাশা বা হতাশা তৈরী হয় । আমাদের দুঃখ হয় ।
পৃথিবীতে এর থেকে বড় দুঃখ আর কিছু হতে পারেনা । সে জন্য এই হতাশা, নিরাশা
বা দুঃখ যাতে না পেতে হয় তার জন্য কিছু বিষয় জেনে রাখা খুব দরকার । আন্দোলন কে
চালাতে পারবে আর কে চালাতে পারবে না এ বিষয়ে পূর্ণ অনুধাবন হওয়া একান্ত প্রয়োজন । বন্ধুরা, যে লোকেরা সুখ-স্বাচ্ছন্দে জীবন অতিবাহিত করে
তারা আন্দোলন চালাতে পারেনা । এটা কে বুঝতে পারবে ?
এটা আন্দোলনকারী কর্মকর্তা
কে বুঝতে হবে । যার কাছে বাংলো, গাড়ী সব কিছু সুখ-স্বাচ্ছন্দের জন্য উপলব্ধ আছে, তার কাছে আন্দোলনের আশাকরা
বৃথা । কারণ এরা সুবিধা উপভোগী লোক । আমাদের মূলনিবাসী বহুজন সমাজের
কর্মকর্তাদের এটা ঠিক করা উচিত যে,
কেউ করুক বা না করুক আমাকে
এই আন্দোলনের কাজ করতে হবে । এরকম চিন্তাধারা নিজের মধ্যে ধারন করলে তবেই সে
আন্দোলনের কাজ করতে পারবে । তবে আন্দোলনকারীদের একটা বিষয় ধ্যান রাখা দরকার যে, সুখভোগী ও সুবিধাভোগী লোকেরা আন্দোলন চালাতে পারেনা । অন্য দিকে অনুকুল
পরিস্থিতি হলে আন্দোলনের কাজ করবো এরকম অনেকেই বলে, তারা কিন্তু যারা এরকম বলে, তারা কোন দিন এই আন্দোলন চালানোর কাজ করতে পারেনা । কারণ অনুকুল বাতাবরন, অনুকুল সময় বা অনুকুল পরিস্থিতির নির্মান কখনই হয়না । পৃথিবীতে আজ পর্যন্ত
এরকম কখনও হয়নি । যদি অনুকুল
বাতাবরন আসে,
অনুকুল সময় আসে, অনুকুল পরিস্থিতি তৈরী হয়
কাজ করার জন্য, তাহলে আন্দোলন করার কি
দরকার ? এই কাজ যখন কেউই করতে চায় না তখন আমাদের করতে হবে । আর যখন
সবাই করতে চাইবে তখন আমাদের এই কাজ করার কোন আবশ্যকতা আছে কি ? এই
নির্নয় কে গ্রহন করবেন ? যিনি মনে করেন কেউ করুক আর
না করুক আমাকে আন্দোলনের কাজ করতে হবে, একমাত্র তিনিই এই নির্নয় গ্রহন করার আধিকারী । আপনারা প্রশিক্ষণে অংশ
গ্রহন করেছেন বলেই আপনাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হবেনা যে, আপনাদেরকে
আন্দোলন করা উচিত । বরং এ নির্নয় আপনাদের গ্রহন করা উচিত যে, আপনারা
আন্দোলনে সহভাগী হবেন কিনা ? তবে এখানে একটা কথা বলে
রাখি, এখানে দুঃখ করার বা আপশোষ করার জায়গা বা সময় নেই । নির্নয়
আপনাকেই গ্রহন করতে হবে । আর এই কাজ কখনো dependent
able ও
হতে পারেনা । অর্থাৎ অমুক এলে আমি আসবো । অমুক আন্দোলনের কাজ করলে আমিও করবো । এই
ভাবনাটার এখানে কোন স্থান নেই । এই ধরনের condition
যারা করেন তাদের জন্য এ
কাজ নয় । It is not conditional work . এখানে একটা কথা বলি, জর্জ
ওয়াশিংটন দু'জন আছেন । একজন আমেরিকার রাষ্ট্র অধ্যক্ষ, অন্য
জন হচ্ছেন-জর্জ ওয়াশিংটন কার্গো । এই কার্গো বলেছেন যে, start where you are. আপনি যেখানে আছেন সেখান থেকেই
শুরু করুন ।
মনে করুন আজ আপনারা এখানে এই প্রশিক্ষন শিবিরে এসেছেন, তো
আজ এখন এখান থেকেই শুরু করুন । অমুক জায়গা,
অমুক সময়, অমুক
দিন থেকে শুরু করা দরকার- এরকম ভাবনা উচিত নয় । আপনি
যেখানে আছেন সেখান থেকেই শুরু করুন । use what you are. আপনার
মধ্যে যে মহত গুণ আছে তার প্রয়োগ করুন । make something of it. তার জায়গা এখান থেকে মনে করুন । but always think, remember, and never be satisfy. এর অর্থ এটা হচ্ছে যে, satisfied লোক আন্দোলন চাকাতে পারেনা । আন্দোলন চালাতে হলে unsatisfied
লোকের দরকার । অর্থাৎ
সন্তুষ্ট লোকেরা আন্দোলন চালাতে পারে না । আবার অল্পসন্তুষ্ট লোকও আন্দোলন চালাতে
পারে না । তাহলে আন্দোলন চানোর যখন দরকার তখন কেমন ধরনের লোক হওয়া দরকার ? আর
এই নির্নয় কে গ্রহন করবেন ? যিনি মনে করেন যে, এই
আন্দোলন আমার চালানো দরকার একমাত্র তিনিই এই কাজ করতে পারবেন । অন্যদিকে যে লোকেরা বাহানাবাজ হয়, তারা কখনও আন্দোলন চালাতে পারবে না । তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বাহানা তৈরী করে ।
তাই এই লোকদের কে বহুজন সমাজের লোক না বলে বাহানাবাজ সমাজের লোক বলা দরকার ।
আন্দোলনকারী কর্মকর্তারা প্রত্যেকের ঘরে ঘরে গিয়ে আন্দোলন করার প্রগ্রামে উপস্থিত
হওয়ার আমন্ত্রন জানালেও এই লোকেরা কখনও প্রগ্রামে উপস্থিত হয়না । পরে কোন না কোন
বাহানা বানিয়ে আসতে না পারার কথা জানায় । এসব কথা আপনাদের জানানোর উদ্দেশ্য এইযে, এইসব
কাজ করতে গিয়ে আপনাদের দুঃখ হবে । কখনও কখনও হতাশাও হতে পারে । কিন্তু আন্দোলনকারী
কর্মকর্তার কাছে কখনও এই বিষয়ের কোন স্থান থাকা উচিৎ নয় । সমাজকে ভরশা দেওয়ার
লোকের যদি দুঃখ বা হতাশায় ভোগে তাহলে সমাজকে পথ দেখাবে কে ? তবে
যারা কথা দিয়েও প্রগ্রামে আসেনা । তারা বাহানা বানাতেই থাকে । তাদের প্রতি কি ব্যাবস্থা গ্রহন করা যায় ? তাদের
কে বাহানাবাজ বলে সমাজে ঘোষণা করে দেওয়া দরকার । যাতে অন্যেও জানতে পারে যে,
অমুক সুবিধাবাদী ও
বাহানাবাজ লোক । অন্য আর একটা দিক-
যারা মিথ্যা কথা বলে তারা
আন্দোলন চালাতে পারেনা । একথা সব সময় মনে রাখতে হবে । আন্দোলন চালাতে হ'লে
সঠিক ও সত্যি কথা বলতে হবে । আর এটা যারা করতে পারে, কেবলমাত্র
তারাই আন্দোলন চালানোর যোগ্য । অনেকে বলেন সরাসরি সত্যি কথা বললে প্রতিক্রিয়া হয় ।
কিন্তু সত্যিকে সত্যি এবং মিথ্যাকে মিথ্যাই বলা উচিত । অনেকে এটা বলেন যে, সত্য
কথা তিতো হয় । তাদের এটা বলা দরকার যে,
সত্যি কথা তিতো নয় মিষ্টিই
হয় । কারণ মিষ্টি, মিষ্টি হয় । আর তিতো, তিতোই
হয় । তাই যারা মিথ্যা বলে তারা আন্দোলন চালানোর যোগ্য হতে পারবেনা । সত্যি কথা বলার লোকেরাই আন্দোলন চালাতে পারবে । আবার যারা ভীতু লোক তারাও কখনও আন্দোলন চালাতে পারেনা। নির্ভয় লোক বা সাহসী লোকেরাই আন্দোলন চালাতে পারে । ভীতু লোকেরা বেঁচে থেকেও মৃতের সমান । আর নির্ভয় ও সাহসী লোকেরা মরার পরেও সমাজ তথা
দেশ ও বিশ্বের সামনে জীবন্ত থাকেন । আর তাদেরই মহামানব বলা হয় । যেমন-হরিচাঁদ
ঠাকুর, গুরুচাঁদ ঠাকুর,
মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ
মন্ডল, শিবাজী মহারাজ,
বাবা সাহেব আম্বেদকর, মহত্মাজ্যোতিরাও
ফুলে, গৌতম বুদ্ধ,
নেলসন ম্যান্ডেলা ইত্যাদি
। এই মহামনবেরা
নির্ভিকভাবে সমাজের
জাগরণের জন্য আন্দোলন করেছেন । তাই এদেঁর শরীরের মৃত্যু হলেও তাদের কর্মের মৃত্যু
হয়নি । 'কর্ম' এই মহামনবদের জীবন্ত করে
রেখেছে । সত্যিও মিথ্যার যিনি অন্তর সঠিকভাবে করতে পারবেন, তিনিই
সঠিক আন্দোলনকারী হতে পারবেন। MANY
PEOPLE WANT TO BECOME GOOD PEOPLE BUT NOT RIGHT PEOPLE. YOU MUST BE RIGHT
PEOPLE NOT GOOD PEOPLE. GOOD PEOPLE আন্দোলন চালাতে পারেনা । একমাত্র RIGHT PEOPLE ই আন্দোলন চালাতে পারে । আবার ভোলে-ভালা
বা সাদা-সিধা লোকেরাও আন্দোলন চালাতে পারেন । আন্দোলন চালাতে গিয়ে
আপনারা কখনও মনের মধ্যে মধ্যে রাগ বা দুঃখের স্থান দেবেন না । কারণ আপনি আজ যে, প্রতিষ্ঠিত
হয়েছেন, সেটা নিজের যোগ্যতায় নয় । মহামনবদের কঠিন সংগ্রামের ফল
উপভোগ করছেন আপনারা । তাই সেই মহামনাবদের কাছে আপনারা ঋণী । সেই ঋণ শোধ করা আপনার
কর্তব্য । YOU NEED PAY BACK TO THE SOCIETY. মহারাষ্ট্রের
বালাসাহেব
ঠাকরের বাবাকে 'প্রবোধন
কর' বলা হয় । কেন ?
প্রবোধন কি ? প্রবোধন
এমন জিনিস যার মাধ্যমে সমাজের কল্যান হয়,
জাতির উন্নতি হয়, আর
এই সমাজের হিত, কল্যান করার জন্য যিনি
নির্ভয়ে কাজ করেন তাঁকেই প্রবোধন কর বলা হয় । কেউ আমার কথা শুনে খুশি হয়ে তালি
বাজাতে পারেন । কিন্তু হাত তালি পাওয়ার জন্য কিন্তু আমি প্রবোধন করছিনা । প্রবোধন করছি সামাজিক দায়িত্ব
হিসাবে । আবার কেউ আমাকে হুমকি দিয়ে এই প্রবোধনের কাজ বন্ধ করতে চাইলেও আমি থেমে
থাকতে রাজি নই । এটা জাগৃতির কাজ । জাগৃতির মধ্যে ছেঁড়া-কাটা
করতে হয় । পিছনে হাত রেখে পরিবর্তন হয়না । সাবাসি দিয়ে বা প্রশংসা করে পরিবর্তন হয়না ।
কৌতুক করেও পরিবর্তন হয়না । তাহলে কি করা দরকার ? এই কাজ করতে গেলে আমার দুঃখ-কষ্ট
হবে, সেটা ভাবলে হবেনা । আবার কেউ আমাকে প্রশংসা করলেও তার কোন প্রশ্রয়
এখানে দিতে নেই । এটাই operation of
revolution.
জাগৃতির পাঁচটি নিয়মঃ-
১.
যে
শত্রুকে সঠিকভাবে নির্নয়
করতে পারবে তাকে জাগৃত মনে করা হবে ।
২. যে মিত্রের অর্থাৎ কে সঠিক মিত তার নির্নয় করতে পারবে তাকে
জাগৃত মনে করা হবে ।
৩. শত্রুর তাকত অর্থাৎ শক্তি এবং কমজোরী বা দুর্বলাতার জানকারী হওয়া দরকার ।
৪.
নিজের
বা নিজেদের শক্তি ও দুর্বলতার অনুধাবন হওয়া দরকার ।
৫.
সঠিক
ইতিহাস জানা একান্ত দরকার । এই পাঁচটি বিষয়ে যিনি যেনে-মেনে- বুঝে
অগ্রসর হন তাঁকে জাগৃত ব্যাক্তি
বলা হয় । কেউ কেউ উচ্চ শিক্ষিত উচ্চ পদাধিকারী হ'তে
পারেন । তাই বলে তাকে জাগৃত বলা যাবেনা । কারণ জাগৃতির সঙ্গে এর কোন সম্পর্ক নেই । জাগৃতির সঙ্গে একাডেমিক শিক্ষার (Academic
Education) কোন
সম্পর্ক নেই । হরিচাঁদ ঠাকুর কোন স্কুল-কলেজে পড়েছেন ? তিনি
তো একাডেমিক শিক্ষিত নন । কিন্তু তিনি জাগৃত ছিলেন । তাই তিনি সমাজ পরিবর্তন করার
কাজ করেছেন । তিনি উপরের পাঁচটি নিয়ম সঠিকভাবে যেনে,
বুঝে, মেনে
ছিলেন বলেই তিনি সমাজ পরিবর্তনের কাজ করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন । এই সব কথা সামাজিক
আন্দোলনকারী কর্মকর্তাদের বোঝা দরকার । এই প্রশিক্ষণে যে কথাগুলো আপনাদের জানানো
হচ্ছে, সেগুলো ধ্যান দিয়ে আপনাদের বোঝার চেষ্টা করা দরকার । আপনারা
নিজেরা সঠিকভাবে বুঝতে পারলে তবেই অন্যকে বোঝাতে পারবেন এবং আন্দোলন চালানোর কাজ
করতে পারবেন । আর অন্যদেরও এই আন্দোলনে সহভাগী করতে পারবেন । প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ
কোন ভাষণ দেওয়ার কাজ নয়। কারণ সমাজের উপকার নয় ক্ষতিই করে । তাই আপনাদের প্রশিক্ষর
মাধ্যমে সবকিছু বোঝানো হবে । তবে সেটা কতক্ষন ?
যতক্ষন আপনারা সঠিকভাবে বিষয়টি বুঝতে না পারছেন
ততক্ষন । এবিষয়ে জানাই যে, এই বোঝানোর কাজ কিভাবে করা দরকার ।
বোঝানোর কাজ কিভাবে করা দরকার ।
এটাকে আমরা এইভাবে ব্যাখ্যা করতে পারি- UNDERSTANDING SERVEY .এটা তিন প্রকার
(১)
যদি
সহজভাবে বোঝানো হয় তাহলে ১৫%
থেকে
২০% কথা লোকে বুঝবেন ।
(২)
যদি
উদাহরণ দিয়ে বোঝানো হয় তাহলে ৪০%
থেকে
৪৫% কথা লোকে বুঝবেন । আর (৩)
যদি
Demonstration অর্থাৎ অং-ভঙ্গি করে, বা অভিনয় করে বোঝানো হয় তাহলে ৬০% থেকে ৬৫%
কথা
লোকে বুঝবেন । একটা কথা মনে রাখতে হবে এই training কোন entertainment কিন্ত নয় । অর্থাৎ এটা কোন মনোরঞ্জনের জন্য
প্রশিক্ষণ নয় । এটা আমাদের যে মূলনিবাসী মহামনবেরা আছেন,
তাঁরা যে আন্দোলন করেছিলেন; সেই
আন্দোলন পুনঃরায় শুরু করার জন্য এই প্রশিক্ষণ । আর তার জন্য দক্ষ ও দায়িত্ববান
কর্মকর্তা নির্মান করার জন্য এই প্রশিক্ষণ । প্রশিক্ষণে যে প্রশ্নগুলো উঠে আসবে
সেটার তর্কসংগত ও সমাধান কারক উত্তর দেওয়া দরকার। তবেই লোক বিষয়টা বুঝে আন্দোলনে সহভাগী হবেন ।
ভারতে দু,প্রকার বিচার ধারা আছে।
(১)
মূলনিবাসী মহামনবদের যুক্তিসংত বিচার ধার ।
যেটা উত্থানের প্রতিক ।
(২)
ব্রাহ্মণবাদের
বিচার ধারা । যেটা ধ্বংসের প্রতীক ।মূলনিবাসী মহামনবদের যে বিচার ধারা সেটা উত্থানের বিচার
ধারা । আর ইউরেশিয়ান ব্রাহ্মণদের যে বিচার ধারা সেটা পতন বা ধবংসে বিচার ধারা । ইউরেশিয়ান ব্রাহ্মণদের বিচার ধারায় কোথাও
প্রশ্নের উত্তর নেই । তারা যেটা বলে সেটা হচ্ছে- আমরা
যেটা বলি ও করি সে বিষয়ে তোমাদের কোন কিছু জানার দরকার নেই; শুধু
মেনে চলো । আসলে তাদের কাছে কোন প্রশ্নের সঠিক উত্তর নেই । আর মূলনিবাসী মহামনবদের প্রত্যেক বিচার ধারার উত্তর আছে ।
তাই আমরা বুদ্ধের বিচার ধারা অনুসারে নির্নয় নিয়েছি-
প্রথমে জান । সঠিক লাগলে
মান । আর না হয় ছেড়ে দাও । এরকম স্বচ্ছ বিচার ধারা পৃথিবীর অন্য কোথাও নেই । জানার
আগে ছেড়ে দেওয়া উচিত নয় । সাধারনতঃ আমাদের লোকেরা না জেনেই মেনে নেয় । কিন্তু কোন
কিছু জানার পর সেটা সঠিক কি গলত তার নির্নয় করা দরকার । তাই মূলনিবাসী মহামনাবদের বিচার ধারা হচ্ছে- প্রথমে
জান, সঠিক লাগলে মান,
আর তা না হলে ছেড়ে দাও । এরকম
স্বচ্ছ বিচার ধারা পৃথিবীতে অন্য কোথাও নেই । জানার আগে ছেড়ে দেওয়া উচিত নয় । সাধারণতঃ
আমাদের লোকেরা না জেনেই মেনে নেয় । কিন্তু কোন কিছু জানার পর সেটা সঠিক কি ভুল
নির্নয় করা দরকার । তাই মূলনিবাসী মহামানবদের বিচার ধারা হচ্ছে প্রথমে জান, সঠিক লাগে তো মান,
আর তা না হলে ছেড়ে দাও । ভারতে দু,প্রকার বিচার ধারা আছে । এক- মূলনিবাসী মহামানবদের
যুক্তি সংগত বিচার ধারা । যেটা উত্থানের প্রতিক । দ্বিতীয় –ব্রাহ্মণবাদের বিচার
ধারা । যেটা ধ্বংসের প্রতিক।
শিক্ষণ এবং প্রশিক্ষণ সাধারণ ব্যাখ্যাঃ-
জন্মের পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত আমরা যা কিছু
শিখি সেটা হচ্ছে শিক্ষণ বা শিক্ষা । অন্য দিকে সাধারণ জ্ঞান থেকে উচ্ছ জ্ঞান
পর্যন্ত আমরা যাকিছু শিখি তাকেও শিক্ষণ বলা হয় । এই শিক্ষণ বিষয়ে তিনটি ব্যাখ্যা আছে । সেগুলো হচ্ছে-
প্রথম ব্যাখ্যাঃ- মহাত্মা জ্যোতিরাও ফুলে
বলেছেন-কোনটা সত্য এবং কোনটা মিথ্যা তার যে সঠিক নির্নয় করতে পারেন তিনি শিক্ষিত ।
অর্থাৎ সত্য এবং মিথ্যার পার্থক্য নির্মান করার আক্কল (বুদ্ধি) যিনি নির্মান করেন
তিনি হচ্ছেন শিক্ষিত ।
SENCE OF TRUTH AND FALS. এই
কথা আপনারা কোথাও কেউ শুনেছেন কি ?
বা শিখেছেন কি ? এখন
প্রশ্ন হচ্ছে- আমি জন্মের পর থেকে সত্য
এবং মিথ্যার পার্থক্য করতে শিখেছি কি না ?
এর সঠিক উত্তর কি ? আমি
কি এটা শিখেছি ? যদি না শিখে থাকি তাহলে -WHAT IS USE OF
EDUCATION ? সত্যের জন্য আমি আপনি কোন সংঘর্ষ করেছি কি ? যদি
না করে থাকি তাহলে আমরা নিজেকে শিক্ষিত কি করে বলতে পারি ?
শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য
(১)
শিক্ষার
মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত -শত্যকে শোধন করা ।
(২)
আর
সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সংঘর্ষ করা । এটা কোন সাধারণ কাজ নয় । কারণ সাধারণ কাজ তো
যে কেউ করতে পারে । কিন্তু এই ভাবে শিক্ষিত হওয়ার কাজের জন্য অর্থাৎ সত্যকে শোধন
করা এবং সেটা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সংঘর্ষ করা যে কেউ করতে পারে না । সেজন্য একাজ
আমাদের করতে হবে আমাদের সমাজকে জাগানোর জন্য ।
দ্বিতীয় ব্যাখ্যাঃ- শিক্ষা সম্পর্কে বুদ্ধের ব্যাখ্যা-সত্যকে
সত্য বলেই জান । আর অসত্যকে অসত্য বলেই মান । তৃতীয় ব্যাখ্যাঃ- শিক্ষা
সম্পর্কে বাবা সাহেব বলেছেন-ঐ একই কথা- সত্যকে
সত্য বলে মানে এবং মিথ্যাকে মিথ্যা বলে গ্রহন করতে । এখন প্রশ্ন হচ্ছে-সত্য
কোনটা ? আর মিথ্যা কোনটা ?
সেটা জানব বা বুঝবোই বা
কিভাবে ? সেটা জানা বা বোঝানোর জন্যেই এই প্রশিক্ষণের প্রয়োজন । ফুলে, বুদ্ধ
এবং বাবা সাহেবের শিক্ষা সম্পর্কের ব্যাখ্যার মধ্যে কোন বিশেষ পার্থক্য আছে কি ? যদি
না থাকে তাহলে আমরা এদেঁরই প্রকৃত শিক্ষিত বলতে পারি । তবে একটা জিনিস মহামানবদের
নাম নিয়ে তাদের কথার বা কাজের ব্যাখ্যা করা এক জিনিস আর সেই কথা বা কাজকে বাস্তবে
নিজের জীবন তথা সমাজের মধ্যে স্থাপিত করা সম্পূর্ণ অন্য বিষয় । এখন প্রশ্ন হচ্ছে
শিক্ষার এইযে ব্যাখ্যা এটা কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দেওয়া হয় কি ? উত্তর
হচ্ছে না । সে জন্য এই ব্যাখ্যা জানানোর জন্যই এই প্রশিক্ষণ । আপনারা সপ্তাহের ছয়
দিন মিথ্যা জিনিসগুলো শেখেন । আর এই প্রশিক্ষণে এসে একদিন সত্য কথা শেখেন । সেজন্য
এই প্রশিক্ষণে অংশ গ্রহন করা দরকার । এবার আসি- প্রশিক্ষণে
। যেকোন শব্দের আগে 'প্র'
প্রত্যয় লাগিয়ে দেখুন; কি
দেখতে পারেন ? বচন হচ্ছে তত্ত্ব । প্রবচন
হচ্ছে-অধিক তত্ত্ব । কোন শব্দের ব্যাখ্যাকে অধিক বোঝানোর ক্ষেত্রে
'প্র' উপসর্গ লাগানো হয় । এভাবেই
'শিক্ষন'কে অধিকতম বা বিশেষতম
বোঝানোর জন্য ব্যাবহৃত হয় প্রশিক্ষণ শব্দের । ব্যাপক দৃষ্টিতে শিক্ষণ শব্দ ছোট ।
আর পরিনাম দৃষ্টিতে প্রশিক্ষণ শব্দ বড় । কারণ-IT IS ALWAYS TARGET ORIENTED. TRAINING IS ALWAYS TARGET ORIENTED.
TRAINING হচ্ছে
উদ্দেশ্য পূর্ণ করার জন্য ।
প্রশিক্ষণ কাকে বলে?
সমাজিক কর্মকর্তাদের প্রবর্তিত দায়িত্বকে
পূর্ণ করার জন্য যে শিক্ষণ দেওয়া হয় তাকে প্রশিক্ষণ বলে । অন্যভাবে এটাকে বলা যায়- মূলনিবাসী মহামানবদের অসম্পূর্ণ কাজকে পূর্ণ করার জন্য
বিশেষভাবে শিক্ষিত কর্মকর্তাদের প্রতি অর্পিত দায়িত্বকে প্রশিক্ষণ বলে । সমাজের মধ্যে আন্দোলন চালানোর জন্য দক্ষ এবং সতর্ক, জাগৃত
কর্মকর্তা নির্মাণের জন্য যে শিক্ষণ দেওয়া হয় তাকেও প্রশিক্ষণ বলে । প্রশিক্ষণের
প্রয়োজন কেন ? এবার দেখুন, কেউ
12 Class পাশ করার পর BA পড়ে । তারপর B-ED পড়ে । তারপর MA পড়ে । এবার দেখুন যে 12 Class পাশ করেছে, সে
কাদের পড়ানোর যোগ্য ? প্রথম শ্রেনী থেকে সপ্তম
শ্রেনী পর্নন্ত । আবার যে BA পাশ করেছে , সে
কাদের পাড়নোর যোগ্য ? মাধ্যমিক পর্যন্ত । আর যে MA পাশ করেছে সে কাদের পড়ানোর যোগ্য ?
12 Class পর্যন্ত
। কিন্তু এর সঙ্গেও একটি কথা জুড়ে আছে যে,
B-ED বা
M-ED না করলে চাকরী পাওয়া প্রায় অসম্ভব । এই B-ED বা M-ED করা কেন প্রয়োজন ? যিনি প্রাইমারী,
মাধ্যমিক বা উচ্ছ মাধ্যমিক-এর
ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াবেন,
সেই পড়ানোর জন্য বিশেষ
জ্ঞান অর্জন করতে হবে । তার জন্যই এই B-ED
বা M-ED করতে হয় । এবার নিশ্চয় বুঝলেন training এর কেন দরকার । এবিষয়ে
একটা উদাহরণকে বুঝতে চেষ্টা করুন । কেউ শিক্ষার step গুলো পার করে LIC এর চাকরীর পরীক্ষায় পাশ
করল । কিন্তু LIC -এর উদ্দেশ্য কি ? LIC-এর উদ্দেশ্য সংস্থার বিকাশ ঘটানো । কিন্তু কিভাবে ? সেটা তো ঐ কর্মচারী কোন দিন তার পাঠ্য পুস্তকে পড়েনি বা শেখেনি । এর জন্যই Training -এর দরকার । এ থেকে আমরা কি বুঝতে পারছি ? Academic Education এর পরেও সংস্থাগত প্রশিক্ষণ করা একান্তভাবে প্রয়োজন । LIC-তে কি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় ? HOW TO CONVNICE THE CUSTOMER. NOTHING MORE. LIC-এর একটাই উদ্দেশ্য Customer কে কিভাবে Convince
করতে হবে । সংগঠনের
কর্মকর্তাদেরও উদ্দেশ্য একটা । কিভাবে সমাজের জনগণকে Convince করতে হবে । আর যে ব্যাক্তি এটা করতে পারবেন, তাঁকেই
কর্মকর্তা হিসাবে মেনে নেওয়া হবে । না হলে নয় । আর এই ধরনের কর্মকর্তা তৈরী করার
জন্যই প্রশিক্ষণের দরকার । এবার একটা উদাহরণ শুনুন- IAS-পরীক্ষার জন্য সারা দেশ থেকে কয়েক লক্ষ্য ছাত্র-ছাত্রী
পরীক্ষায় বসেন ।
আর পাশ করেন UPSC- (The Indian Administrative Service is the administrative
civil service of the Government of India. The IAS officers are recruited
through the exam of Union Public Service Commission (UPSC)-এর মাধ্যমে মাত্র ধরুন ৫০
জনের মত পরীক্ষার্থী । এতে তিনটি পরীক্ষা হয় ।
১.ILIGIBILITY TEST-অর্থাৎ Collectorএর পরীক্ষার যোগ্য কিনা, তার
পরীক্ষা । ২.WRITTEN TEST
৩.ORAL
TEST এই
তিন পরীক্ষায় পাশ হলেই শুধু হোলনা । তাকে training
নিতে হয়। তারপর তাকে
প্রথমে Posting দেওয়া হয় –পঞ্চায়েতী ব্যাবস্থায় । পরে- জেলা
পরিষদীয়
ব্যাবস্থায় । পরে- পুরসভায়
পরে- মহাপুরসভায় । পরে-
Assistant Collector তারপরে- Deputy collector অবশেষে -Collector. এসব কি ? এসবই Training. অনুভব । Experience
is nothing but training. এই সব কিছু করার পরেই Collector
হয় । এখন এসব শুনে আপনাদের
মধ্যে কোন প্রশ্নের নির্মাণ হ,তে পারে । হওয়াটাই
স্বাভাবিক । কারণ মনের মধ্যে প্রশ্নের নির্মাণ হওয়া জিবন্ত মানুষের লক্ষণ । আপনারা
ভাবতে পারেন BA পাশ বা MA পাশ বা Collector এর Training করা দরকার এটা ঠিক আছে । কিন্তু আপনি আমাদের কি Training দেবেন ? আমি মূলনিবাসী মহামানবদের অপূর্ণ কাজকে পূর্ণ করতে চাই । আর
সেটা করার জন্য সমাজের মধ্যে দায়িত্বশীল,
দক্ষ এবং প্রশিক্ষিত
কর্মকর্তার নির্মাণ করতে চাই । এর জন্য এই সামাজিক প্রশিক্ষিণ । এবিষয়ে আপনাদের
একটা উদাহরণ দিচ্ছি-মুক্তা সাল্ভে এক জন অস্পৃশ্য মাতং জাতির
মেয়ে । সে তৃতীয় শ্রেনীতে পড়ত ১৮৫৫ সালে । তখন তার বয়স ছিল সাড়ে এগার বছর । সে একটা চিঠি লেখে । চিঠির বিষয় ছিল মাহার এবং মাতংদের দশটি বিষয়ের আবেদন । সেই আবেদন-এর
কয়েকটি হচ্ছে-ব্রাহ্মণরা, তোমরা
আমাদেরকে ধর্ম গ্রন্থ পড়তে দেওনা । কেউ পড়লে তার মুন্ডচ্ছেদ কর । তাহলে তোমাদের
আমাদের ধর্ম এক কিভাবে ? তোমরা
আমাদেরকে ধর্ম গ্রন্থ পাঠ শুনতে দেওনা । কেউ পাঠ শুনলে তার কানে গরম তেল ঢেলে দাও
। তাহলে তোমাদের আমাদের ধর্ম এক কিভাবে ?
এর অর্থ মুক্তা সাল্ভে
ব্রাহ্মণী ধর্মকে অস্বীকার করেছিল । এবার প্রশ্ন
হচ্ছে-মুক্তা সাল্ভে যেটা করেছিল ১৮৫৫ সালে সেটা আজ আমাদের করার দরকার কি না ? মুক্তা
যেটা বুঝেছিল আমরা সেটা কখনও বোঝার চেষ্টা করিছি কি ? একজন
তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্রী যেটা বুঝেছিল আজ আমরা BA,MA
PhD ইত্যাদি
করেও সেটা কি ভাবছি ? তাহলে বলুন এই BA, MA, PhD ইত্যাদি শিক্ষিতরা বড় ? না
এই তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্রী বড় ?
এসব শুনে আপনাদের মনে
কিভাবনা জাগে ? Guilty ? But don't file guilty. কারণ মুক্তার শিক্ষক ছিলেন –মহাত্মা জ্যোতিরাও ফুলে ।
স্কুল ছিল-মহাত্মা জ্যোতিরাও ফুলের।
পাঠ্যক্রম ছিল- মহাত্মা জ্যোতিরাও ফুলের বানানো । আর আমাদের ক্ষেত্রে-
স্কুল-
আমাদের
শিক্ষক-
আমাদের
পাঠ্যক্রম-
ব্রাহ্মণদের।
এসব জানা ও বোঝার জন্যই শিক্ষিত লোকদের নিয়ে
এই Training করা অত্যন্ত আবশ্যক । ফুলের যে
শিক্ষা দিতেন সেটাতে তর্ক করা শেখানো । আর আমাদের শিক্ষায় ? কোন
তর্কের প্রশ্নই নেই । মহারেষ্ট্রের মহামানব-গাড়্গে মহারাজ কোন Academic শিক্ষিত নন । কিন্তু তাঁর নামে বর্তমানে লোকে PhD করছেন । এই গাড়্গে মহারাজ বলেছেন-অশিক্ষিত লোক অপেক্ষা
শিক্ষিত লোকেরা বেশি অন্ধশ্রদ্ধা করে । তিনি আরও বলেছেন- গ্রামের
লোক অপেক্ষা শহরের লোকের বেশী অন্ধশ্রদ্ধা করে ।
বুদ্ধিজীবী কাকে বলে ?
শিক্ষিত হওয়া একজিনিস, আর
জাগৃত হওয়া কিন্তু সম্পূর্ণ অন্য জিনিস । শিক্ষিত আমরা অবশ্যই । যে লিখিত জিনিস পড়ে তাকে
পড়া লেখা বলা হয় । আর যে লিখিত বস্তুর থেকে তার ভীতরের অর্থ বের করে তাকে বুদ্ধিজীবী বলা হয় । BETWEEN TE LHINE AND BEHIND THE LINE যে পড়ে তাকে বুদ্ধিজীবী
বলে । কারণ লেখা জিনিস তো যেকেউ পড়তে পারে। কিন্তু তার অন্তর্নিহীত অর্থ যে খুঁজে বের করে সে
হচ্ছে প্রকৃত বুদ্ধিজীবী । উদাহরণ স্বরূপ-
হরিলীলামৃত সবাই পড়তে পারে এবং পড়ে । যারা পড়ে গতানুগতিক
অর্থ বোঝে, তারা শুধু শিক্ষিত ব্যাক্তি । কিন্তু যারা তার মধ্যে লুকিয়ে
থাকা অর্থকে প্রকাশ করে তাকে বলা হয় বুদ্ধিজীবী । যে কাজ করছেন আমাদের মনী মোহন
বোইরাগী, মণীন্দ্রনাথ বিশ্বাস -এর মত লোকেরা । তাই BIHIND
THE LINE AND BETWEEN THE LINE বোঝার জন্য এই প্রশিক্ষণ । সমাজের পিছিয়ে পড়া লোকদের মানষিক
গোলামীকে মুক্ত করে তোলা হচ্ছে আমাদের উদ্দেশ্য । সেটা পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা
কখনই মানষিক শান্তি পেতে পারিনা । আপনারা যখন মানষিক গোলামী থেকে মুক্ত হবেন তখন
আমরাও মুক্ত হবো ।
তাই যে পর্যন্ত আপনারা
বুঝবেন না সে পর্যন্ত আপনাদের কে বোঝানোর কাজ আমাদের করে যেতে হবে । আপনাদের
বোঝাতে গিয়ে আমরা কোন রাগ করতে পারবনা । কারণ বুদ্ধের কথায় করুনা করতে হবে ।
প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য প্রশিক্ষণের প্রথম উদ্দেশ্য- আমাদের
সমাজ বা মূলনিবাসী বহুজন সমাজ হচ্ছে-যেকোন দিকে চালিত সমাজ ।
যারা কোন নির্দিষ্ট লক্ষে চালিত নয় । এদের কোন চালক নেই , তাই
যে যা বলে সেই দিকেই এরা না জেনে না বুঝে ছুটতে থাকে । তাই এই চালকহীন, দিশাহীন , উদ্দেশ্যহীন
সমাজকে চালক-দিশা-উদ্দেশ্য
দেওয়াই হচ্ছে প্রশিক্ষণের প্রথম উদ্দেশ্য । এখানে আমরা প্রশ্ন করতে করতে পারি এই
চালকহীন, দিশাহীন ও উদ্দেশ্যহীন সমাজের পথ দেখানোর দায়িত্ব কার ? এ
দায়িত্ব নিশ্চয় শিক্ষিত মানুষদের । অর্থাৎ আমার,আপনার, আমাদের
। তবে সেটা তখন হবে যখন আমরা নিজেদের শিক্ষিত বলে স্বীকার করব । কোন শিক্ষিত ? যে
শিক্ষিতের কথা আমি পূর্বে আপনাদের জানিয়েছি,
সেই শিক্ষিত । দ্বিতীয়
উদ্দেশ্য- অজাগৃত লোকদের জাগৃত করার জন্য এই প্রশিক্ষণ । অসংগঠিত
লোকদের সংগঠিত করার জন্য প্রশিক্ষণ । নেতৃত্বহীন লোকদেরকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য এই
প্রশিক্ষণ । দিশাহীন লোকদের দিশা দেওয়ার জন্য এই প্রশিক্ষণ । এটা এবার আপনারা
বুঝতে পারছেন যে, এটা কোন সাধারণ ব্যাপার নয়
। যেখানে range বা বিচার ধারার আলো নেই সেখানে Range
বা Network পৌঁছানোর জন্য এই প্রশিক্ষণ । কাউকে Call
করলে যেমন বলে-customer service থেকে- ‘ক্ষেত্রের বাইরে আছে’ । যোগাযোগ করা
যাচ্ছে না ।
আমরা সমাজে Network দিয়ে লোকদের ক্ষেত্রের মধ্যে আনতে চাই । তার জন্য এই প্রশিক্ষণ । মোবাইলের
যেমন ব্যাটারি চার্য করতে হয় । এটাও তেমনি সমাজকে চার্য দেওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ ।
মূলনিবাসী বহুজন মহামানবদের অপূর্ণ কাজ পূর্ণ করার জন্য এই প্রশিক্ষণ । এই দেশের
মধ্যে পরিবর্তন করার জন্য যোগ্য কর্মকর্তা নির্মাণ করার জন্য এই প্রশিক্ষণ ।
এদেশের মধ্যে রক্তহীন ক্রান্তি করার জন্য কর্মকর্তা নির্মাণ করার জন্য এই
প্রশিক্ষণ । লোকদের মধ্যে সঠিক বিচার ধারা প্রচার প্রসার করার জন্য এই প্রশিক্ষণ ।
লোকদের মধ্যে Information দেওয়ার জন্য এই প্রশিক্ষণ
।
INFORMATON-এর ব্যাখ্যা
পৃথিবীর মধ্যে তিন প্রকার Information আছে ।
1.
Developed
2.
Developing
3.
Backward
Develop কাকে বলে ? যে দেশের মধ্যে সর্বপ্রকার
বিকাশ ঘটেছে তাকে Developed Country বলা হয় । আমেরিকা, রাশিয়া, দক্ষিন
কোরিয়া, জাপান, চিন হচ্ছে Developed Country . Developing কাদের বলা হয় ? যে দেশের মধ্যে বিকাশ চলছে
তাদের Developing Country বলা হয় । যেমন- ভারত
বিকাশ শীল দেশ । আর Backward কাদের বলা হয় । যে দেশের
মধ্যে কোন প্রকার বিকাশ হয়নি তাদের Backward
Country বলা
হয় । এই কথাগুলো বলার আসল বিষয় সম্পর্কে এবার আলোচনা করি । একটা জিনিস লক্ষ করুন, যেক'টা
দেশ ক্রিকেট খেলে তার মধ্যে অষ্ট্রেলিয়া ও ইংলান্ড ছেড়ে বাকী সব দেশ কিন্তু Backward. এবার আপনাদের কাছে আমার একটা প্রশ্ন হচ্ছে যে, আমেরিকা,জাপান, রাশিয়া,চিন, দক্ষিন
কোরিয়া ক্রিকেট খেলে কি ? এরা কি বোকা লোক ? এবিষয়
আপনারা ভাবুন । যদি তারা বোকা বা গাধা হোত তাহলে তারা Develop হতে পারত না ।
আপনারা জানেন কি আমেরিকার ইতিহাস কত বছরের ? 600 বছরের । আর ভারতের ইতিহাস ? ভারতের ইতিহাস হচ্ছে 5000 বছরের । ইতিহাস হচ্ছে সম্পদ । যাদের ইতিহাস যত বেশী তাদের তত বিকাশ হওয়ার
দরকার । যেখানে আমেরিকার ইতিহাস 600 বছরের, আর
আমাদের 5000 বছরের
। তাহলে আমাদের মধ্যে বিকাশ হয়নি কেন ? এটা আপনাদের ভেবে দেখা দরকার । এই বিকাশ না হওয়ার কারন কি ? আপনাদের শুনে
আশ্চর্য লাগবে, আমেরিকার যখন জন্ম হয়, সেই সময়ে ভারতে বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ।
নালন্দা, তক্ষশীলা, অবয়ন্তি, উজ্জয়ণী, বিক্রমশীলা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ।
বিদেশ থেকে লোক এখানে পড়তে আসত । 63 বিষয়ের উপর শিক্ষা দেওয়া হ'ত । নালন্দায় 15000 ছাত্র-ছাত্রী একসঙ্গে পড়াশুনা করতে পারত । 600 শিক্ষক ছিল । 90 টি গ্রন্থালয় ছিল । বিদেশ
থেকে পড়তে সে সময়ে লোকের এদেশে আসত । আর বর্তমানে ? এখান
থেকে লোক বিদেশে যায় শিক্ষার জন্য । খুব গর্ব করে Foreign return বলে । সে সময়ে আমাদের দেশ থেকে তর্ক শাস্ত্র পড়ে গিয়ে নিজের
দেশে গিয়ে ছাত্ররা গবেষণা করত । কিন্তু এখন ?
তর্ক করা পাপ । তর্ক করা
দেশদ্রোহীতা । কিন্তু তর্কই গবেষণার জননী । আবশ্যকতা আবিষ্কারের জননী । সে সময়ে
বুদ্ধিজম
63 বিষয়ে তর্ক শিখিয়েছে । আমেরিকার বিকাশ হয় । আর আমাদের ? একটা
জিনিস ভাবুনতো । জাপানের হিরোশিমা নাগাসাকিতে 1945 এর 9ই
আগস্ট পারমানবিক বোমা মারা হয় । সব কিছু ধ্বংস হয়ে যায় । আর 1947 সালের 15ই আগস্ট ভারত স্বাধীন হয় ।
এর অর্থ দু'টো দেশেরই প্রগতিকরার জন্য একই সময় মিলেছে ।
তাহলে প্রগতি কার হয়েছে ? আমাদের প্রগতি কেন হয়নি ? এর
জবাব কে দেবে ? আমেরিকা জানকারী (Information ) বা তথ্যকে সুরক্ষিত করার জন্য কম্পিউটারের আবিষ্কার করে ।
এখন Computer এর মধ্যে সব ধরনের Information রাখার ব্যাবস্থা করে হয়েছে । আমেরিকা এটা কেন করেছে ? কারণ
সব Information মাথার মধ্যে রাখতে গেলে নতুন করে আবিষ্কারের
চিন্তা তৈরী কিভাবে হবে ? তাই সব Information computer এ থাকলে মাথায় ধরে রাখার দরকার নেই । প্রয়োজনে নতুন
আবিষ্কারে মন দেওয়া যাবে । আমেরিকার চিন্তা কি ? Information সব মাথার মধ্যে রাখলে মাথা গুলিয়ে যেতে পারে বা Information এর blast হয়ে যেতে পারে । আর আমাদের
দেশের চিন্তা কি
? এদের তো কোন Information এর দরকারই নেই । তাই Blast
হওয়ার প্রশ্নই আসেনা । আর
আমাদের মূলনিবাসী
বহুজনদের চিন্তা কি ? তারা
তো কিছুই জানে না । তারা কোন কিছু জানার প্রয়োজন ও মনে করেনা । আর আমাদের শিক্ষিত লোকদের চিন্তা কি?
কিছুই জানানা । Information nothing.এটাই আমাদের সমস্যা । এসব কথা বুঝতে হবে । এটা আপনাকে কোন মিডিয়া বলবেনা বা সেখাবেনা । তার জন্য এই প্রশিক্ষণ । Information দেওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ । Information বা জানকারী থাকলে তার উপর বিচার-বিশ্লেষণ
করতে পারবে । বিচার বিশ্লেষণ করে যে নির্নয় গ্রহন করে সে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে । যে
স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে সে শাসক তৈরী হয় । এসব কিছু করার জন্য নেতৃত্বের দরকার
। আর এই নেতৃত্বের জন্যই এই
সব জানকারী দরকার । আপনারা একটা কথা শুনে অবাক হতে পারেন । কি কথা ? কথাটি হচ্ছে মূলনিবাসীদের শত্রু অর্থাৎ
ইউরেশিয়ান ব্রাহ্মণরা ভয় পেয়ে গেছে । আর মূলনিবাসী বহুজনের নিরাশার শিকার হয়েগেছে
। এটা একটা বৈপরিত্য নয় কি ? শত্রু ভয় পেলে আমাদের
নিরাশ হওয়ার প্রশ্ন আসেনা । আবার আমরা নিরাশ হ'লে শত্রুর ভয় পাওয়ার কারণ
হওয়া উচিত নয় । কিন্তু কেন এই বৈপরিত্য? শত্রু
কেন ভয় পাচ্ছে ? Because he is well informed.
আগামী 50/100 বছরে কি হবে সেটা ভেবে তারা শংকিত । আমরা এই যে মূলনিবাসী বহুজন সমাজকে
জাগরণের কাজ করছি , এটা ব্রাহ্মণরা খুব ভাল
করে জানে এবং সব রকমের খোঁজ রাখে ।
এপ্রসঙ্গে
আপনাদের একটা সত্যি ঘটনা জানাই । বগুলা কলেজ ময়দানে হরিচাঁদ ঠাকুরের
দ্বিশতবর্ষজন্মোৎসব পালিত হয়েছিল 2012 সালের 9,10, ও 11
February. সেই prgrammeএ মুম্বাই থেকে
কয়েক জন অংশগ্রহন করেছিল । বাংলার RSS লোকদেরকে মুম্বাই থেকে আগত লোকদের চেনার প্রশ্নই আসেনা । তারা মুম্বাই
থেকে আগতদের সব ধরনের Information সংগ্রহ করছিল । মুম্বাই থেকে আগতদের রাত্রে
যেখানে থাকতে দেওয়া হয়, তাদের (RSS) ও পাশের রুমে থাকতে
দেওয়া হয় । কিন্তু পরের দিন সকালবেলা কথায় কথায় জানা যায় তারা ব্রাহ্মণ । কিন্তু
ততক্ষনে তারা নাগালের বাইরে চলেগেছে সব
তথ্য সংগ্রহ করে । মুম্বাই-এর কর্মকর্তারা কম/বেশী সামাজিক জাগৃত বলেই বগুলার প্রগ্রামের
জন্য ছুটে এসেছিলেন । কিন্তু তারাও ব্রাহ্মণদের এই গুপ্তচরদের চিনতে পারেননি । তো
অন্যের চেনার প্রশ্ন তো বহুত দূর কি বাত ।
একথা বলার উদ্দেশ্য এই যে, তারা আমাদের
মধ্যে ঢুকে আমরা কিভাবে জাগৃত হওয়ার চেষ্টা করছি সেটা তারা সংগ্রহ করে ।
এবিষয়ে
আরও একটি ঘটনা মনে পড়ছে । যেটা মুম্বাইতে হয়েছিল ।
TISS- Tata Institute of Social Sciences –এর পক্ষ থেকে দু’দিনের একটা প্রগ্রামের আয়োজন করা হয়েছিল । যে প্রোগ্রামে
বিশেষ করে ভারতের বড় বড় কলেজ ও উনিভার্সিটির প্রফেসরদের নিমন্ত্রন দেওয়া হয়েছিল ।
সেখানের আলোচ্য বিষয় ছিল-
Caste in India: Presence and Erasure, January 20-21, 2014
ভারতের জাতিপ্রথার বর্তমান অবস্থা ও তার বিলুপ্তি করণ ।
অনেক উৎসাহ নিয়ে ঐ প্রোগ্রামে হাজির হই । কিন্তু কিছুক্ষন প্রগ্রাম দেখার
পর আমার মাথা ঘুরে যাওয়ার মত অবস্থা হয় । সেখানে অতি উচ্চ মানের ইংরাজীতে লেখা
ভাষণ পাঠ করা হচ্ছিল । আমি যেটা বুঝে আশ্চর্য হয়ে গেলাম সেটা হচ্ছে- ওখানের ভারতের
জাতিপ্রথার বর্তমান অবস্থা ও তার বিলুপ্তি
কিভাবে হবে ? সেটা Subject দিয়ে একটা
সুকুমার রায়-এর খুড়োর কল বানানো হয়েছে । আসলে এখানের আলোচ্য বিষয়-বস্তু ছিল এই জাতি
ব্যাবস্থার স্বীকার লোকেরা কতটা অগ্রসর হয়েছে । কতটা সংগঠিত হয়েছে । এদের অগ্রসরতা
ও সাংগঠনিক শক্তি উচ্চবর্ণীয়দের কোন মাথা ব্যথার কারণ হচ্ছে কিনা ? হলে কতটা ?
ইত্যাদি ইত্যাদি । যার নাম দিয়েছি আমি বিড়াল ও ইদুরের খেল ।
অর্থাৎ উচ্চবর্ণীয় বিড়াল, নিম্ন বর্ণীয়
হচ্ছে ইদুর । ইদুরকে ধরে বিড়াল খেলা করে । একবারে মেরে খায় না। খেলা করার সময় দেখে
ইদুরকে ছেড়ে দিলে সে কতদূর যেতে পারে । সেটা কি নাগালের বাইরে ? আর এরাও দেখছে এই
নিম্ন বর্ণীয়রা অর্থাৎ ইদুররা কতটা শক্তিশালী হয়েছে । তাদের শক্তি বিড়ালদের জন্য
ভবিষ্যতে কোন বিপদ ডেকে আনবে না তো?
আর এই প্রোগ্রাম অন্ততঃ এক কোটির উপরে
খর্চা করে করা হয়েছে । প্রতিটি বক্তার প্লেনে আসা যাওয়া ,থাকা খাওয়া ইত্যাদি
ফ্রিতে । সঙ্গে দর্শকদের ও খাওয়া ফ্রিতে ।
এসব কথা বলার উদ্দেশ্য এই যে ,
আমরা ভাবছি আমরা নিজেরা তো সংগঠিত নই । কিন্তু ব্রাহ্মণরা উল্টো ভাবছে । যে কোন
মুহুর্তে যদি আমরা জাগৃত হয়ে সংগঠিত হয়ে যাই, তাহলে ওদের বিপদের ঘন্টা বাজবে ।
সেজন্য গুপ্তচর লাগিয়ে অগননা (uncountable) টাকা খরচ করে আমাদের উপর প্রতিনিয়তঃ দৃষ্টি
রাখছে । শুধু দৃষ্টি রাখা নয় । যখনই দেখছে আমরা কিছুটা জাগৃত হয়ে সংগঠিত হতে
যাচ্ছি তখনই সেটাকে ভেঙে দেওয়ার প্লান করছে । আর আমাদের নেতৃত্বকে মতিভ্রম করে
তুলছে বিভিন্ন লালসা দিয়ে । তাই আমাদের সব
সময় অতি সতর্ক দৃষ্টি নিয়ে প্রতিটি পদক্ষেপে অগ্রসর হতে হবে । কারণ যে শত্রুর উপর
দৃষ্টি রাখে সে হচ্ছে আসল শত্রু ।
কর্মকর্তাদের
প্রকার ভেদ । কর্মকর্তা পাঁচ প্রকার হয় ।
(1) Trained-প্রশিক্ষিত ।
(2) Committed or social committed সামাজিক দায়িত্ববোধ সম্পন্ন ।
(3) Devoted
(4) Dedicated
(5) যেভাবে বলা হবে সেভাবে
চলতে হবে ।
Trained-প্রশিক্ষিত ।
যখন আপনি প্রশিক্ষন গ্রহন করবেন, তখন
আপনাকে বলা হবে cadre.
Cadre অর্থাৎ প্রশিক্ষিত কর্মকর্তা । সমাজের মধ্যে দু’প্রকার লোক
আছে । এক হচ্ছে- crowed অর্থাৎ ভীড় বাড়ানোর লোক । আর
দ্বিতীয় হচ্ছে- cadre. যারা প্রশিক্ষিত কর্মকর্তা । যারা
সমাজকে নিয়ে আন্তরিকভাবে ভাবেন বা কাজ করেন । সামাজিক দুঃখকে নিজের দুঃখ বলে মনে
করেন । তারা হচ্ছেন cadre. প্রশিক্ষিত cadreকে কেউ ভ্রমিত করতে পারেনা । সে সমাজকে সঠিক দিশা দেখায় । সমাজের মধ্যে
‘মাহুত’ নির্মান করার জন্য এই প্রশিক্ষণের দরকার । মাহুত কে ? যে হাতির পিঠে চড়ে
হাতিকে নির্দেশ দেয় ।প্রশিক্ষিত কর্মকর্তা ও সমাজের উপর চড়ে সমাজকে দিশা দেয় ।
নেতাদেরকে প্রশ্ন করার জন্য এই পশিক্ষিত কর্মকর্তার দরকার । তর্ক করার লোক সমাজে
নির্মান করা দরকার । বিচার করার লোক সমাজে নির্মান করা দরকার ।
Committed or social
committed সামাজিক দায়িত্ববোধ সম্পন্ন
যে কর্মকর্তার মধ্যে সামাজিক দায়িত্ব বোধ
জাগ্রত আছে, সেই ধরনের কর্মকর্তাকে committed বলা হয় ।
সামাজিক
দায়িত্ব কি ?
আমি যে জাতির মধ্যে জন্ম গ্রহন করেছি, আমি যে
সমাজের মধ্যে জন্ম গ্রহন করেছি; সেই জাতি ও সমাজ থেকে আমি শিক্ষা গ্রহনের যে বিশেষ
সুবিধা পেয়েছি । সেই জাতি ও সমাজের নামে যে শিক্ষা, চাকরি ও অন্যান্য ক্ষেত্রে
সুবিধা আছে, সেই সুবিধা গ্রহন করে আমি শিক্ষিত হয়েছি । আমি চাকরি পেয়েছি । চাকরির
প্রমোশন পেয়েছি । যে জাতি ও সমাজের সব সুবিধা গ্রহন করে আমি সব দিক দিয়ে
প্রতিপত্তিশালী হতে পেরেছি । আমার মান-সম্মান বৃদ্ধি হয়েছে । -এই সব কথা যে স্বীকার
করে তাকে committed বলে । এটাই
হচ্ছে সামাজিক দায়িত্ব বোধ । আর এই সামাজিক দায়িত্ব বোধের শ্রেয় কাকে দেওয়া দরকার
? এই শ্রেয়ের অধিকারী সেই সব মহামানব যাঁরা আমাদের জন্য এই সুবিধাগুলো এনে দিয়েছেন
। পশু থেকে আমাদের মানুষের স্তরে তুলে দিয়েছেন । যে মহামানবরা নিজের জীবনকে বাজি
রেখে সংগ্রাম করে আমাদের এই সুবিধা এনে দিয়েছন । সেই সব মহামানবরা হচ্ছেন- মহামানব গৌতম বুদ্ধ, হরিচাঁদ ঠাকুর, গুরুচাঁদ
ঠাকুর, মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল, বাবা সাহেব ডঃ বি. আর. আম্বেদকর ও অন্যান্য
মহামনবরা । আর এদেঁর এই অবদানের কথা যারা মাথা পেতে স্বীকার করে তারা committed কর্মকর্তা ।
আমরা আমাদের নিকট আত্মীয়দের বা পরিবারের
প্রতি commetted বলে তাদের
প্রয়োজনীয় দায়িত্বকে পালন করি । যেমন সন্তানদের শিক্ষিত করার কাজ করি । আত্মীয়
পরিজনদের সেবা শুশ্রূষা করি । কারণ তারা আমার নিকট আত্মীয় । তাই তাদের প্রতি আমাকে
committed থাকতে হয় ।
আবার আমরা নিজের চাকরি ক্ষেত্রেও committed থাকি । সেখানে সব নিয়ম মেনে
দায়িত্ব পালন করি । কর্মচারি সংগঠনের প্রতিও আমরা committed থাকি । প্রয়োজনে সেখানে চাঁদাও দেই
।
কিন্তু সমাজের ক্ষেত্রে আমরা commetted কি ? যে সমাজ থেকে আমরা সব সুবিধা নিয়ে নিজের
প্রতিপত্তি বৃদ্ধি করেছি । গায়ে ভাল পোশাক , শরীরে বেশ চর্বি, অনেক মান-সম্মান সব
কিছুই আমরা সমাজ থেকে গ্রহন করেছি; মহামানবদের সামাজিক আন্দোলনের ফল স্বরূপ । কিন্তু যখন বলা হয় আপনি সমাজ থেকে সব
কিছু গ্রহন করেছেন, কিন্তু সমাজের প্রতি আপনার কোন দায়িত্ব নেই কি ? Pay back to the society করা কি আপনার
কর্তব্য নয়? তখন সে কথা তার
কানে প্রবেশ করেনা । সেশুধু পেতে চায় । বদলে সমাজকে কিছুই return করতে
চায় না । সে সমাজের প্রতি committed হওয়ার কথা কল্পনাও করতে পারেনা ।
তো তাদের এই
সমাজিক দায়িত্ব বোধকে জাগৃত করার জন্য এই প্রশিক্ষণ । রোগীকে যেমন রোগ থেকে মুক্ত
করার জন্য ওষুধ বা ইন্জেকশন দিতে হয়, প্রশিক্ষণ তেমনি এক প্রকার ইন্জেকশান ।
মুমুর্ষ সমাজকে জাগানোর জন্য তাই এই প্রশিক্ষণ । আর যিনি মনে করেন সমাজের অবদান
তিনি গ্রহন করেছেন বলে আজ সব সুবিধা উপভোগ করছেন । তাই সমাজের প্রতি তার দায়িত্ব ও কর্তব্য তার আছে । যেমন দায়িত্ব কর্তব্য আছে
তার পরিবারের প্রতি । এটা যিনি মানেন ও করেন তাকেই committed কর্মকর্তা বলা হয় ।
এবিষয়ে একটা ঘটনা বলি,- আমি একটা প্রোগ্রামে
যাই । সেখানে এক ব্যাক্তি জানান যে, তিনি মেরিটে উচ্চ স্থান অধিকার করেছেন ।
সেখানে তার কোন সংরক্ষণের প্রয়োজন হয়নি । তাই তিনি জানান যে, আপনাদের সংরক্ষণের
আমার কোন দরকার নেই। তিনি কিন্তু Scheduled Caste এর লোক। তখন আমি তাকে বলি- আপনি MBBS হয়েছেন, তার জন্য অভিনন্দন । আপনি মেরিটে
এসেছেন তার জন্যও অভিনন্দন । আপনার এই কৃতিত্বের ব্যাপারে আমার কোন Objection নেই। তবে আমি আপনাকে একটা প্রশ্ন করছি, তার জবাব
দেবেন আশাকরি । আমি বলি – আপনার বাবা কি কাজ করতেন ? তখন তিনি বলতে ইতস্ততঃ বোধ
করেন । আমি বলি বলুন বলুন । তখন তিনি বলেন- আমার বাবা রাস্তার পাশে বসে জুতা
সেলাই-এর কাজ করতেন। তখন আমি বলি- এটা কিছুতেই সম্ভব নয় । যার ছেলে মেরিটে স্থান
পেয়েছে । MBBS পাশ করেছে ।
তার তো ‘ডিন’ হওয়া দরকার ছিল । জুতা সেলাই কি করে করে ? যার ছেলে এত কিছুর
অধিকারি, সেই ছেলের বাবা কি করে জুতা সেলাই-এর কার করে ?
তখন আমি বলি –কেন তিনি (অর্থাৎ ঐ ব্যাক্তির
বাবা,) ‘ডিন’ হন্নি ? তখন তিনি বলেন- তার বাবা লেখা পড়া জানত না । তখন আমি বলি- কেন তিনি
লেখাপড়া শেখেন্নি ? তখন তিনি জানান তার বাপ/ঠাকুরদার আমলে শিক্ষার অধিকার ছিল না
তাই । তখন আমি বলি- লেখাপড়ার অধিকারকে মহামানবেরা সংগ্রাম করে এনে দিয়েছেন বলেই আজ
আপনি মেরিটে স্থান পেয়েছেন। তা না হলে আপনার অবস্থা আপনার বাবার থেকে উপরে হওয়ার
প্রশ্নই আসেনা । কিন্তু আপনি মহামানবদের অবদানকে স্বীকার করছেন না। আপনার মধ্যে
সামাজিক দায়িত্ব বোধ নেই । একথা শোনার পর তার কানে জল যায় ।
এই অবস্থা আমাদের সমাজের প্রায় প্রতি ঘরে ঘরে
আজ বিদ্যমান । যার জন্য সমাজের এই শোচনীয় অবস্থা । এই দৈন্য দশা সমাজের 99% লোকের মধ্যে বিরাজ মান । কিন্তু যিনি স্বীকার করেন ও সমাজকে pay back করেন তাকেই Social Committed বলা হয় ।
আমাদের বাবা/ঠাকুরদা কেন অশিক্ষিত ? কারণ
তাদের শিক্ষার অধিকার ছিল না। আজ আমরা হরিচাঁদ ঠাকুর, গুরুচাঁদ ঠাকুর, মহাপ্রাণ
যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল, বাবা সাহেব আম্বেদকর-এর সংগ্রামের ফল উপভোগ করে
প্রতিপত্তিশালী হতে পেরেছি । আর যাঁরা আমাদের এই প্রতিপত্তিশালী করার জন্য
রক্ত-ঘাম ঝরিয়েছেন তাঁদের কে আমরা কাঙাল বানিয়ে দিয়েছি । তাদের কোন photo বা মুর্তিকেও আমরা সহ্য করতে পারিনা । জাত-পাত
বলে গালি দেই । এই হচ্ছে আমাদের শিক্ষার অবদান ।
হরি-গুরুচাঁদ ঠাকুর সামাজিক, ধর্মীয় ও
শৈক্ষনিক আন্দোলন চালিয়ে ছিলেন । সেই আন্দোলনের ধারাকে অগ্রগতি দেন মহাপ্রাণ
যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল । আর সেই ধারাকে বাস্তবতায় রূপদান করার জন্য মহাপ্রাণ, বাবা
সাহেবকে সংবিধান সভায় পাঠান । বাবা সাহেব সংবিধানে আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেন । তাই আমরা এই সব
সুবিধা ভোগ করেতে পারছি ।
বাবা সাহেব
বলতেন –সমাজের উত্থান ও পতনের জন্য শিক্ষিত লোকেরা জবাবদার । সমাজের কেন আজ পতন
ঘটছে ? শিক্ষিত লোকেরা এই বিচার করবে না তো অশিক্ষিতরা কি বিচার করবে ? কিন্তু
শিক্ষিত লোকদের কথা হচ্ছে- আমাদের কাছে সময় নেই । অর্থাৎ তারা কোন সামাজিক দায়িত্ব
গ্রহন করেতে চায় না। তবে তারা যাতে এই সামাজিক দায়িত্ব গ্রহন করার মানাসিকতা পেতে
পারে সে জন্যই এই প্রশিক্ষণ ।
Training দু’প্রকার
।
Ideological Training এবং Historical Training.
Ideological Training:-বিচার ধারার উপর আধারিত প্রশিক্ষণ হচ্ছে Ideological Training.
Historical Training:-ইতিহাসের আধারে যে Training দেওয়া হয় তাকে Historical Training বলা হয় ।
এই Training এর উদ্দেশ্য হচ্ছে সমাজকে জোড়ার জন্য ।
গলার থেকে যে
আওয়াজ বের হয় ,সেটা সমাজকে জোড়ার জন্য ব্যবহার করা দরকার । ভাঙার জন্য নয়। দু’খন্ড
কাঠকে জোড়ার জন্য wielding করতে হয় ।
দুটো ছোট কাঠের টুকরো জোড়ার জন্য ফেভিকল লাগে । দু’টুক্রো কাগজকে জোড়ার জন্য আঠা
লাগে । দু’টুকরো কাপড়কে জোড়ার জন্য সেলাই করা দরকার হয় বা সেলাই মেশিন লাগে । আমরা
মানুষ জুড়তে চাই । দু’টি ভিন্ন ভাবনার মানুষকে জোড়ার জন্য কি দরকার ? দরকার সঠিক
বিচার ধারার । যে বিচার ধারা প্রগতি মূলক।
যে বিচার ধারা ক্রান্তিকারি । সেই বিচার ধারাই পারে এক মাত্র মানুষকে জুড়তে । এই Training শান্তিতে বসে থাকার জন্য নয় । এই Training ক্রান্তি করার জন্য । (চলবে)
I like it.Teach us earnestly.
ReplyDelete