Saturday 22 December 2018

// // Leave a Comment

কারা বাংলাকে দ্বিখণ্ডিত করলো এবং কার স্বার্থে-পর্ব ১ থেকে পর্ব ৪ - লেখক- সুনীতি কুমার ঘোষ


 সৌজন্যে 'মুল্ধারা বাংলাদেশ' এখানে অনেক অজানা তথ্য উঠে এসেছে।  http://www.muldharabd.com/?p=688&fbclid=IwAR1XjpKJan3-9QBEhiVimwa6VVxZxh2v296y-4m7HdmgZvfuCq7krkG1Oxo 
কারা বাংলাকে দ্বিখণ্ডিত করলো এবং কার স্বার্থে-পর্ব ১
https://i0.wp.com/www.muldharabd.com/wp-content/uploads/2016/04/three-leaders.jpg?resize=752%2C355
লিখেছেনঃ  সুনীতি কুমার ঘোষ, পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট বাম তাত্ত্বিক
sunit gosh
পরিস্থিতি এমন ছিল যে বাংলার ভাগ্য বাংলার জনগণের উপর নির্ভর করছিল না, নির্ভর করছিল সম্পূর্ণ বাইরের তিনটে শক্তি উপর- তাদের মধ্যে আপস ও চুক্তির উপর। আমরা দেখবো এই তিনটি শক্তির মধ্যে দুটি শক্তি- ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ ও মুসলিম লীগ নেতৃত্ব প্রস্তুত ছিল বাংলাকে হিন্দুস্থান ও পাকিস্তানের বাইরে অবিভক্ত রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকার করতে; কিন্তু স্বীকার করতে প্রস্তুত ছিল না অন্য শক্তিটি অর্থাৎ কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় নেতারা। এবং তাঁদেরই চাপে বাংলাকে দ্বিখণ্ডিত করা হয়।
Read More

Friday 12 October 2018

// // Leave a Comment

বিজয় দশমী উৎসব ও উদযাপনের ইতিহাস - জগদীশচন্দ্র রায়। সৌজন্যে কলম পত্রিকা।

Read More

Saturday 4 August 2018

// // Leave a Comment

রিজার্ভেশান গরীবি হটাও এর কার্যক্রম নয়। লেখক – জগদীশচন্দ্র রায়


রিজার্ভেশান গরীবি হটাও এর কার্যক্রম নয়।

লেখক – জগদীশচন্দ্র রায় 
Sc, ST & OBC এর সাংবিধানিক রিজার্ভেশানের মূল অর্থ হচ্ছে – প্রতিনিধিত্ব (representation). যদিও এর প্রতিনিধিত্বের মূল ধারণাকে বদলে দিয়ে গতানুগতিক রিজার্ভেশনের সঙ্গে গুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বা হচ্ছে। যার ফলে এই প্রতিনিধিত্বকে সমাপ্ত করার জন্য  কৌশল করে আওয়াজ  তোলা হচ্ছে আর্থিক আঁধারে রিজার্ভেশন দেওয়ার দেওয়া হোক। এই আওয়াজে বৈদিকবাদীরাতো আছেই সঙ্গে তাল মিলাচ্ছে কিছু দালাল। বাবা সাহেব বলেছিলেন,  আমি কাজ করার জন্য তীক্ষ্ম বুদ্ধিসম্পন্ন লোক না পেলেও চলবে, সেটা আমি পূর্ণ করে নেব। কিন্তু আমি ইমানদার লোক চাই।
Read More

Sunday 29 April 2018

// // Leave a Comment

বাংলা ভাগ ও যোগেন্দ্রনাথ লেখক – জগদীশচন্দ্র রায়





বাংলা ভাগ ও          যোগেন্দ্রনাথ
      লেখক – জগদীশচন্দ্র রায় M.No 9969368536 Email ID roy.1472@gmail.com

    একটা প্রবাদ আছে যতো দোষ, নন্দ ঘোষ। নন্দ ঘোষের প্রতি দোষের ইতিহাস না জানলেও যাঁর সম্পর্কে এই আলোচনা করছি, এই বিষয় সম্পর্কে তাঁর দোষ কতটা বা অন্যের দোষ কি তাঁর উপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে? তবে কেন? তাহলে আসল দোষী কে বা কারা? আর কেনই বা তাঁরা যোগেন্দ্রনাথের উপর সমস্ত দোষ চাপিয়ে দিতে চাইছে? কি ই বা তাদের উদ্দেশ্য ? এ সব বিষয়ের উপর আলোকপাত করার চেষ্টা করছি।
    শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর একটা কথা আছে, ‘দেশভাগ হোক না হোক বাংলাকে অবশ্যই ভাগ করতে হবে।” কেন? একবার পাঠকগণ ভেবে দেখুন বা তথ্য খুঁজে দেখুনতো ১৫ই আগস্ট ১৯৪৭ এর পূর্বে সমগ্র(পূর্ব ও পশ্চিম) বাংলায় কোন ব্রাহ্মণ বা উচ্চবর্ণীয়দের শাসন ছিল কি? আর এই সময়ের পরে পশ্চিম বাংলায় কোন নিম্ন বর্ণীয়দের  শাসন এসেছে কি? আশাকরি, বিদগ্ধ পাঠক বুঝতে পেরেছেন শ্যামাপ্রসাদ কেন ঐ কথা বলেছিলেন।
শুধু এই কারণটাই নয়, বাংলা ভাগের অন্যান্য মুখ্য কারণগুলি হলো-
 প্রথম কারণঃ- বাংলা প্রান্তে মুসলিম এবং পিছিয়ে পড়া শ্রেনীর(বিশেষ করে নমঃশুদ্র) লোকদের সংখ্যা সর্বাধিক ছিল । সেখানে মুসলিম লীগের সরকার ছিল। যদি বাংলার বিভাজন না হয়  তাহলে মুসলিম আর পিছিয়ে পড়া শ্রেনীর সত্তা চিরস্থায়ী হবে। সেখানে উচ্চবর্ণীয়দের কোন অধিকার থাকবে না । 
দ্বিতীয় কারণঃ- বাংলার খুলনা, যশোর, ফরিদপুর, বরিশাল এই এলাকা থেকে বাবা সাহেবকে নির্বাচিত করে সংবিধান সভায় পাঠানো হয় । তাই বাংলা বিভাজন করে বাবাসাহেব যে ক্ষেত্র থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন সেখান থেকে বাবাসাহেবের সদস্য পদ খারিজ করার উদ্দেশ্যে বাংলা ভাগ করে ছিল 
তৃতীয় কারণঃ-  যে নমঃ(শুদ্র)রা বাবাসাহেবকে সংবিধান সভায় নির্বাচিত করে পাঠিয়েছেলেন তাদেরকে সাজা দেওয়ার জন্য যাতে তারা আজীবন মুসলমানদের আধীন থাকে, এই শিক্ষা দেওয়ার জন্য বাংলা ভাগ করেছিল 
আর একটা কারণ, সেটা আপনারা মানুন আর নাইবা মানুন; সেটা হচ্ছে-
 যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল হচ্ছেন বাংলার আম্বেদকর। তাঁর ক্ষমতা কত সুদূর প্রসারী ও শক্তিশালী, সেটা তাঁর থেকে উপকার প্রাপ্তরা কতটা বুঝেছেন বলা মুশকিল। তবে উচ্চবর্ণীয়রা সেটা হাড়ে হাড়ে  বুঝতে পেরে ছিলেন বাখার গঞ্জ কেন্দ্রের জয় থেকে শুরু করে বাবা সাহেবকে সংবিধান সভায় পাঠানো পর্যন্ত। যার জন্য তারা হর পল মহাপ্রাণের লাগামকে নিজেদের কন্ট্রোলের বাইরে যেতে দেয়নি। বরং সব সময় যোগেন্দ্রনাথে বিরুদ্ধে নিজের জাতির লোক দিয়ে যেমন বিরোধীতা  করিয়েছে। তেমনি তারা বুঝতে পেরেছিল, বাংলা ভাগ না হলে কোন দিনই উচ্চবর্নীয়দের কব্জায় বাংলার শাসন ক্ষমতা আসবে না। তাই গোদের উপর বিষ ফোড়াটাকে স্বমূলে নির্মুল করার  জন্য বাংলা ভাগ করা তাদের কাছে অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে। এখানে আর একটা কথা বলে রাখি ঐ সময়ে নেতাজীর অন্তরধান হওয়া উচ্চবর্ণীয়দের বাংলা ভাগ করার কাজটি সুগম হয়।
আপনারা হয়তঃ জানেন। যে গান্ধীর কথা স্কুলে পড়ানো হয়, যে “দেশভাগ হতে হলে আমার মৃত  শরীরে উপর দিয়ে যেতে হবে।”  সেই গান্ধীর উপস্থিতিতে ১৯৪২ সালে ১৫ই জুন কংগ্রেসের অধিবেশনে দেশভাগের প্রস্তাব পাশ হয়। (তথ্যঃ- মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ ৩য় খণ্ড লেখক- জগদীশ চন্দ্র মন্ডল)  
    এতোকিছু প্লান মাফিক হওয়ার পরেও বাংলা ভাগের জন্য দোষ চাপিয়ে দেওয়া হ’ল  যোগেন্দ্রনাথ মন্ডলের উপর। কেন? কারণ, আপনারা জানেন, দুর্বা ঘাস প্রচন্ড রোদের শুকিয়ে গেলেও আবার বর্ষার জল পেলে জেগে ওঠে। যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল সেই জাতের লোক ছিলেন। যার প্রমান ‘মায়ের ডাক’ পত্রিকায় একবার প্রকাশিত হয়, “যোগেন মন্ডলরা আবার যাগছে।”  অর্থাৎ  কোন প্রকারেই নিশ্চিহ্ন করতে পারছিল না উচ্চবর্ণীয়রা। যার জন্য তারা যোগেন্দ্রনাথের উপর তাদের মিথ্যা অপবাদের শক্তিসেল প্রয়োগ করে। পরিস্থিতি এমন আকার ধারণ করে যে, তাঁর সঙ্গে কেউ দিবালোকেও দেখা করতে যেতে সাহস পেতেন না লজ্জায়বর্তমানে সেই পরিস্থিতি থেকে অনেক উত্তরোণ ঘটলেও কিন্তু শত্রু পক্ষ তাঁরই সমাজের লোকের মধ্যে তাঁর নামে বিভিন্ন ভাবে মিথ্যা প্রচার করেই চলেছে। আর তাঁরই শ্রমের বিনিময়ে সংরক্ষিত সংরক্ষণের(১৯৬৫ এর লকুড় কমিটির সুপারিশ বন্ধ করে নমঃশূদ্র, দাস, সুড়ি/সাহা ও রাজবংশীদের তপশিলী জাতির অন্তর্ভুক্ত করে রাখেন।) সুবিধা নিয়ে সরকারী চাকরী করে তাঁর প্রতি বিষ উগরে দিচ্ছে। একটা  জাতির পক্ষে এর থেকে লজ্জা ও ঘৃণার আর কি হ’তে পারে!!! এই গোলামদের কোন গ্রেড দেবেন আপনারা?   
বাঙ্গলা বিভাজন যাতে না হয় তার জন্য ১৯৪৭ সালে যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল বাংলার বিভিন্ন জায়গায় বাংলা বিভাজনের বিরুদ্ধে লোকদের জাগৃত করার কাজ করেন । খড়িবাড়ি(দার্জিলিং) , জলপাইগুড়ী, দিনাজপুর, হরিনারায়নপুর, খোলাপোতা গ্রাম(২৪ পরগনা ) কলকাতা, বর্ধমান, বীরভুম, হুগলী ইত্যাদি জায়গায় বাংলা বিভাজনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন । যেকোন পরিস্থিতিতে তিনি বাংলাকে বিভাজিত হতে বন্ধকরার চেষ্টা করেছিলেন । বাংলা বিভাজনের পক্ষে
কংগ্রেস আর উচ্চবর্নীয়রা কেন ছিল সেটা জানা খুব দরকার এবিষয়ে সরাসরি তুলে দিলাম নিচের অংশ। অনুসন্ধানী পাঠকরা আশাকরি, বুঝতে পারবেন যে, কাদের স্বার্থে ও চক্রান্তে বাংলা ভাগ হয়েছিল। আর যে কাজে যোগেন্দ্রনাথের কোন অংশগ্রহণই ছিল না তিনি কি করে সেই কাজের জন্য দোষী হন??? দেখুন নিচের অংশ। আর জানান আপনার মতামত।

বঙ্গীয় ব্যবস্থাপরিষদে বঙ্গভঙ্গের প্রস্তাব গৃহীতঃ-

   বৃটিশ গভর্ণমেন্টের ৩ জুনের ঘোষণা অনুযায়ী ২০ জুন, বঙ্গীয় ব্যবস্থা পরিষদের হিন্দু  সংখ্যাগরিষ্ঠ ও মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল সমূহের প্রতিনিধিগণ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে দুইটি পৃথক সভায় মিলিত হলেন। হিন্দু প্রধান জিলাগুলির হিন্দু ও মুসলমান সদস্যগণ একটি সভায় মিলিত হলেন এবং মুলসমান প্রধান জিজাগুলীর হিন্দু ও মুসলমান সদস্যগণ আর একটি পৃথক  সভায় মিলিত হলেন। বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া, মেদিনীপুর, হুগলি, হাওড়া,  কলকাতা, ২৪  পরগণা, খুলনা, জলপাইগুড়ি এবং দার্লিলিং এই এগারটি হিন্দুপ্রধান জিলার হিন্দু ও মুসলমান  সদস্যগণ যে সভায় মিলিত হলেন তাতে সভাপতিত্ব করলেন বর্ধমানের মহারাজা স্যার উদয়চাঁদ   মহতাব এবং মুসলমান প্রধান জিলাগুলির হিন্দু ও মুসলমান সদস্যগণ মিঃ নূরুল আমিনের  সভাপতিত্বে একটি পৃথক সভায় মিলিত হলেনপ্রথমদিকে কংগ্রেস পক্ষের দাবিতে উভয় অধিবেশনে সমগ্র বাঙলা বর্তমান গণপরিষদে যোগদান করবে বলে একটি প্রস্তাব উত্থাপিত হয়। এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ১২৬ ভোট এবং পক্ষে ৯০ ভোট হওয়ায় প্রস্তাবটি আগ্রাহ্য হয়।
    পরে হিন্দুপ্রধান অঞ্চলের প্রতিনিধিগণের সভায় বঙ্গবিভাগের প্রস্তাব উত্থাপিত হয়। উক্ত প্রস্তাবটি ৫৮-২১ ভোটে গৃহীত হয়। এই অংশের শাসনতন্ত্র প্রণনের উদ্দেশ্য বর্তমান গণপরিষদে  যোগদানের প্রস্তাব ৫৮-২১ ভোটে গৃহীত হয়। অপরপক্ষে মুসলমান প্রধান অঞ্চলের সসস্যগণের সভায় বঙ্গবিভাগের বিরুদ্ধে ১০৬ জন ও পক্ষে ৩৪ জন কংগেসী সদস্য ভোট প্রদান করেন। এই অংশের শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করবার জন্য বর্তমান গণপরিষদে যোগদান করবে না, মুসলমান প্রধান অঞ্চলগুলির জন্য যে নতুন গণপরিষদ গঠি হবে, সেই গণপরিষদে যোগদান করবে তার একটি  প্রস্তাব উত্থাপিত  হয়। মুসলমান প্রধান অঞ্চলগুলির জন্য যে নতুন গণপরিষদ গঠিত হবে, সেই গণপরিষদের যোগদানের প্রস্তাবের পক্ষে ১০৭ জন ও বিপক্ষে  ৩৪ জন ভোট প্রদান করায়  প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। মুসলমান প্রধান সদস্যদের সভায় আর একটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, তাহলে উক্ত জেলাকে পূর্ববঙ্গ নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করে নিতে স্বীকৃত আছে। ১০৫-৩৪ ভোটে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। এই অংশের কংগ্রেসী ৩৪ জন সদস্য প্রত্যকটি প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন।

বাঙলা ভাগের যে ভোটাভুটি হয় তাতে যারা অংশ গ্রহণ করেন, তার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিম্নে প্রদত্ত হলঃ-

   এই ভোটাভোটিতে মোট ২২৫ জন সদস্য অংশ গ্রহণ করেন। তন্মধ্যে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ট অঞ্চলের ৮০ জন এবং মুসলমান গরিষ্ঠ অঞ্চলের ১৪৫ জন। ইউরোপীয়ান ২৫ ভোট দানে বিরত থাকেন। হিন্দু সংখ্যা গরিষ্ঠ এলাকার ৮০ জনের মধ্যে, হিন্দু ৫৮ জন, মুসলমান ২১ জন,  এয়াংলো ইন্ডিয়ান ৪ জন এবং ভারতীয় খৃষ্টান ১ জন।
     উক্ত ৫৪ জন হিন্দুর মধ্যে অ-কংগ্রেসী ভোটার ৫ জন। তারা হলেন – ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী (হিন্দুমহাসভা) মহারাজাধিরাজ স্যার উদয়চাঁদ মহতাব (স্বতন্ত্র), মুকুন্দবিহারী মল্লিক (স্বতন্ত্র), রতনলাল ব্রাহ্মণ (কমিউনিষ্ট) এবং জ্যোতি বসু (কমিউনিষ্ট)।
    ২১ জন মুসলমানের বিশিষ্টদের মধ্যে মিঃ এস. এইচ. সোহারাবর্দী (মূখ্যমন্ত্রী), মিঃ এম. এ. এই. ইস্‌পাহানী (মুসলিম লীগের কার্যকরী সমিটির সদস্য),  মিঃ আবুল হুসের (সম্পাদক, বঙ্গীয় মুসলিম লীগ), মিঃ আবদুর রহমান (সমবায় ও ত্রাণ দপ্তরের মন্ত্রী) এবং নবাব মুসারফ হোসেন।
    মুসলমান সংখ্যা গরিষ্টদের এলাকায় হিন্দু কিরণশঙ্কর রায়, ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত (যথাক্রমে কংগ্রেস এসেমব্লি পার্টির নেতা ও উপনেতা), নেলী সেনগুপ্ত এবং পি. আর. ঠাকুর (প্রমথরঞ্জন ঠাকুর)।
    মুসলমান গরিষ্ঠ অঞ্চলের ১৪৫ জনের মধ্যে, মুসলমান ১০৩ জন, হিন্দু ৪১ জন, ভারতীয় খৃষ্ঠান ১ জন।
    ৪১ জন হিন্দুর মধ্যে ৬ জন অ-কংগ্রেসী তফশিলী সদস্য, তন্মধ্যে মন্ত্রীদ্বয় দ্বারিকনাথ বারুরী ও নগেন্দ্র নারায়ণ রায়, মহারাজা গিরিশচন্দ্র নন্দী, সতীশ চন্দ্র চক্রবর্তী, ভোলানাথ বিশ্বাস, হারাণচন্দ্র বর্মণ (উপয় পার্লামেন্টারী সেক্রেটারী), গয়ানাথ বিশ্বাস (ময়মন সিং) এবং একজন কমিউনিষ্ট সদস্য ছিলেন।
    মুসলমানদের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লিখিত মিঃ এ.কে. ফজলুল হক, মিঃ মহাম্মদ আলি (রাজস্ব মন্ত্রী), মিঃ নুরুল আমিন (স্পিকার), মিঃ আহম্মদ হোসেন (কৃষি মন্ত্রী), মিঃ সামসুদ্দীন আহম্মদ (শ্রম ও বাণিজ্যমন্ত্রী) অন্যতম।
    পশিমবঙ্গ ব্লকের দুইটি হিন্দু আসন, যথাক্রমে কলিকাতা পূর্ব (সাধারণ) এবং জলপাইগুড়ি- শিলিগুড়ি সাধারণ (তফশিলী আসন দুটিকে ভোট থেকে বিরত রাখা হয়। তাছাড়া, বাখরগঞ্জ দক্ষিণ- পশ্চিম সাধারণ ( তফশিলী) আসনটিকেও ভোট থেকে বিরত রাখা হয়।
বাখরগঞ্জ দক্ষিন- পশ্চিম সাধারণ তফশিলী আসনটির নির্বাচিত সদস্য আমাদের যোগেন্দ্রনাথ। যোগেন্দ্রনাথকে এই ভোটাভোটিকে অংশ গ্রহণে বিরত রাখার কারণ যোগেন্দ্রনাথ তখন অন্তর্বর্তী সরকারে আইনমন্ত্রী। সুতরাং ব্যবস্থা পরিষদের এই ভোটাভোটিতে তাঁর পক্ষে যোগদান করা আইনগত দিক থেকে বাধা ছিল। তে প্রামণ হয় ভারত তথা বাঙলা ভাগের ব্যাপারে যোগেন্দ্রনাথের কোনও মতামত গ্রহণ করা হয়নি।
    কথায় বলে চোরের মার বড় গলা। যাদের ভোটে বাঙলা ভাগ হল, যার ফলে উভয় বাঙলার বিপুল সংখ্যক লোক তাদের পৈতৃক বাসস্থান হতে উৎখাত হলেন, স্বাধীন দেশে যারা পরিচিত হলে উদ্বাস্তু বলে, আজ তাদের ভাগ্য নিয়ে সারা রাজনৈতিক ফয়দা তুলছেন, সেই সকল স্বার্থান্বেষী রাজনৈতিক নেতা ও সমর্থকদের সঙ্গে সমসুরে সুর মিলিয়ে যোগেন্দ্রনাথের স্ব-জাতীয় কতিপয় স্বার্থান্বেষী উচ্চস্বরে চিৎকার করেন- বাঙলা ভাগের জন্য প্রধানত যোগেন্দ্রনাথই দায়ী। সরল প্রাণ বাঙালি এদের ক্ষমা করলেও ইতিহাস এদের ক্ষমা করবে না।
(তথ্য সংগ্রহ- মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ ৩য় খন্ড পৃঃ ১৪৭-১৫০ লেখক – জগদীশ চন্দ্র মন্ডল )
----------------







Read More

Monday 1 January 2018

// // Leave a Comment

ভীমা কোরেগাঁও ১৮১৮ এর ১লা জানুয়ারী বিজয় দিবস লেখক- জগদীশচন্দ্র রায়




ভীমা কোরেগাঁও ১৮১৮ এর ১লা জানুয়ারী বিজয় দিবস

লেখক- জগদীশচন্দ্র রায়

    এই ঘটনা ১৯০০ শতাব্দীর প্রথম দিকের কথা। ভারতের অচ্ছুৎ জাতির মধ্যে এক জাতি হচ্ছে মাহার (তপশিলি) যাদের বিরুদ্ধে পেশোয়া অর্থাৎ মহারাষ্ট্রের পুনের ব্রাহ্মণরা ‘মার্শাল ল’ চালু করেছিল। সেটা হচ্ছে- এই মাহারদের গলায় মটকা বা হাড়ি বেঁধে রাখতে হবে থুথু ফেলার জন্য, আর পিছনে ঝাড়ু বেঁধে রাখতে  হবে রাস্তা দিয়ে চলার পরে যেন পায়ের দাগ মিশে যায় ঝাড়ুতে, তার জন্য। আসলে সম্রাট অশোকের সময়ে নাগবংশীরা যে প্রগতি করে ছিল বৌদ্ধ ধম্মের মধ্য দিয়ে, তার প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য এই ‘মার্শাল ল’ লাগিয়েছিল ব্রাহ্মণরা। তবে মাহার জাতি তাদের বীরত্বের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। কিন্তু যখন অধিকারযযেন পায়ের দাগ মিশে যায় ঝাড়ুতে ত                 ছিনিয়ে নেওয়া হয়, তখন যে কোন জাতি বিকলাঙ্গ হতে পারে। মাহাররা নিজেদের হারিয়ে যাওয়া শৌর্য-বীর্যকে প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচেষ্টা  করছিল, আর সেই সময় ইংরেজরা তাদের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত করার কাজে লিপ্ত ছিল। এরকম পরিস্থিতিতে ইংরেজদের দৃষ্টি মাহারদের প্রতি যায়। কারণ, মাহাররা তাদের কর্মকুশলতায় পারদর্শী ও বীর্যবান ছিল। ইংরেজরা বৃটিশ সেনার জন্য মাহারদের প্রবেশাধিকার দেয়। মাহারদের ফৌজি  প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ইংরেজদের পেশোয়া ব্রাহ্মণদের ক্ষমতা খর্ব করে বৃটিশ রাজ স্থাপন করার ইচ্ছা ছিল। পেশোয়াদের উপর আক্রমণ করার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দেয় ইংরেজরা। মাহারদের সেনাপতি সিদ্‌নাথ এই খবর জানতে পারেন। তখন তিনি নিজে বাজিরাও পেশোয়ার সঙ্গে দেখা করতে যান। পেশোয়া বাজিরাও-এর কাছে গিয়ে সিদ্‌নাথ বলেন,- “ইংরেজদের পক্ষ থেকে  তোমাদের বিপক্ষে লড়াই করার জন্য আমাদের কোন ইচ্ছা নেই। আর এসব আমি চাই ও না। যদি আমরা তোমাদের হয়ে ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করে ইংরেজদেরকে এদেশ থেকে তাড়িয়ে দিতে পারি, আর যদি আমরা এটা বাস্তবে করতে পারি; তাহলে তোমাদের শাসনে আমাদের স্থান কি হবে?”(বিজ্ঞ পাঠকগণ ভেবে দেখুন এই প্রশ্ন গুরুচাঁদ ঠাকুরের প্রশ্নের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে কি না? সেই একই প্রশ্ন যুদ্ধ শেষে আমাদের স্থান কি হবে?

রাজাদের সে সভায়    তোমাদের স্থান নয়

    তোমরাত’ শুধু বাদ্য যন্ত্র।

যুদ্ধকালে প্রয়োজন    বাদ্য যন্ত্র আগণন

যুদ্ধ শেষে কে করে সন্ধান? -গুরুচাঁদ চরিত পৃঃ ৪৪৩)

 

পেশোয়া বাজিরাও, সিদ্‌নাথের এই প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে।  আর বলে,- “সুইয়ের অগ্রভাগে যতোটা ধুলিকণা  লাগতে পারে, ততটা ধুলিকণাও তোমাদের মতো মাহারদের জন্য   দেওয়া হবেনা। তোমরা আমাদের পায়ের ধুলার মতো। আর তোমরা ওই পায়ের ধুলা হয়েই থাকবে। চতুর্বর্ণ ব্যবস্থায় তোমাদের জন্য যে ব্যবস্থা করা হয়েছে, তাতে সামান্যমাত্র পরিবর্তন  হবেনা। তোমারা যেমন নীচ্‌ আছো তেমনি নীচ্‌ই থাকবে।”

পেশোয়ার জবাব শুনে সিদ্‌নাথের রক্ত গরম হয়ে ওঠে। তখন তিনি বলেন,- “আমরা আজ পর্যন্ত তোমাদের অন্যায় অত্যাচার সহ্য করে এসেছি। কিন্তু আজ তোমরা নিজেরাই তোমাদের মৃত্যু রেখা টেনে দিয়েছো।”

এরপর মাহাররা হাতিয়ার তুলে নেন। প্রতিজ্ঞা করেন এই উচ্চবর্ণীয় ভাবনাকে ধুলায় মিশিয়ে দেওয়ার জন্য।

তিনি পেশোয়া বাজিরাওকে বলেন,-“যুদ্ধের ভাষা আমাদের সঙ্গে করবে না। এই মাটিতে আমাদের জন্ম হয়েছে। এই মাটিই আমাদের বড় করেছে। তাই এই মাটির লজ্জা আর লুন্ঠিত হতে দেবো না। নিজেদের ন্যায্য অধিকার অর্জনের জন্য যুদ্ধ করা কোন পাপ কাজ নয়। এটাই যুদ্ধের অন্তিম ঘোষোণা।”

    এই ঘোষণা করে সিদ্‌নাথ ওখান থেকে চলে যান। আসলে পেশোয়াদের অত্যাচারের ফলে মাহাররা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। তাই স্বাভিমানী জীবন যাপনের জন্যই তিনি যুদ্ধ করার রাস্তা বেঁছে নেন এমন সময় যখন মাহাররা বৃটিশ আর্মির একটা অংশ ছিল। এমতো সময় পেশোয়াদের এই ঘৃণাজনক কথার ফলে মাহার সৈন্যদের রক্ত টগবগিয়ে ওঠে প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য।

বাবা সাহেব বলেন,-“যেখানে সহ্যক্ষমতা সমাপ্ত হয়ে যায়, ওখান থেকেই ক্রান্তির জন্ম হয়।”    

মাহার সেনারা হাজার বছরের অপমান অন্যায় অত্যাচারের বদলা নেওয়ার জন্য পেশোয়া  ব্রাহ্মণদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের বিউগল বাজিয়ে দেন। আর আধুনিক ভারতে সমতামূলক নতুন সমাজ নির্মাণের নতুন ইতিহাসের সূচনা হয়।  ভীমা নদীর কুলে অবস্থিত কোরেগাঁও এর ঘটনা এটা (মহারাষ্ট্রের পুনেতে)১ জানুয়ারী ১৮১৮। ইংরেজদের ৫০০ মাহার সেনার ২৫০ জন ঘোড়ায়  চড়ে, দুটো কামান নিয়ে ক্যাপটেন স্টুয়ার্টনের নেতৃত্বে অগ্রসর হন। আর সামনে পেশোয়া ব্রাহ্মণদের ২৫০০০ এর বেশি পদাতিক সেনা, আর ৩০০০ ঘোড়ায় চড়া সৈন্য। উভয় পক্ষ মুখোমুখি হওয়ার জন্য ক্যাপ্টেন স্টুয়ার তার সৈন্যদের নিয়ে ২৫ মাইল  দুর্গম পথ পায়ে হেটে ১লা জানুয়ারী ১৮১৮ তারিখ সকালবেলা কোরেগাঁও পৌঁছায়। সকল সৈন্যরা সূদীর্ঘ পথ হেটে আশার ফলে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। কিন্তু কোন রেষ্ট না নিয়েই যুদ্ধে লিপ্ত হতে হয়।

   মাহার সেনার নেতৃত্ব রকনাথ, জকনাথ ও ভীখনাথ করছিলেন। একদিন একরাত নিরন্তর এই যুদ্ধ চলে। আর দেখতে দেখতেই পেশোয়াদের ২৫০০০ সেনা ধুয়ার মতো উড়ে যায়। ৫০০ মাহার সৈন্যদের সামনে পেশোয়া ব্রাহ্মণদের বিশাল সৈন্যবাহিনী ধুলায় মিশে যায়। এই যুদ্ধে ইংরেজদের পক্ষের ২৭৬ জন সৈন্য মারা যায়। এই লড়াইয়ে কিভাবে বিজয় অর্জিত হয়েছিল সেটা সারা দুনিয়া তখন জেনেছিল।। আর ইতিহাস এই ঘটনায় গৌরবান্বিত হয়। এই যুদ্ধে বীরগতি প্রাপ্ত সৈন্যদের শৌর্যকুশলতা বিশ্বের ইতিহাসে অমরত্ব লাভ করে; যেটা ভীমা কোরেগাঁও-এর এই ৭৫ ফুট উঁচু  বিজয় স্তম্ভ সেই সহীদদের উদ্দেশ্যে করা হয়েছেএই ক্রান্তি স্তম্ভ বা বিজয় স্তম্ভকে সেলুট করার  জন্য বাবা সাহেব ড. আম্বেদকর প্রতিবছর ১লা জানুয়ারী আসতেন।  

    ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারী এই বিজয় দিবসের ২০০ বছর পূর্ণ হয়েছে। এই গৌরবান্বিত ইতিহাস স্মরণ করার উদ্দেশ্য স্বাভিমান অন্তরের থাকলে অসম লড়াইয়েও বিজয় প্রাপ্ত করা সম্ভব।  এই ঐতিহাসিক বিজয়ের ঘটনা তুলে ধরার কারণ, যারা তোমাদের পিছিয়ে রেখেছে হাজার বছর ধরে, সেই গোলামির শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য স্বাভিমানী হয়ে সংগ্রামে লিপ্ত হও। বিজয় হবেই।  

 তথ্য সংগ্রহ- নিচে দেওয়া ভিডিও লিঙ্ক থেকে।


Read More